ইদানীং শিশুদের লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সার একটি পরিচিত এবং মারাত্নক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতালগুলোতে প্রচুর লিউকেমিয়া রোগী পাওয়া যাচ্ছে।

এই বাচ্চাদের সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা করতে পারলে অনেকক্ষেত্রেই সাফল্য পাওয়া যায়। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুরা ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসায় অনেক ভালো সাড়া দেয়। তাই লিউকেমিয়া সম্পর্কে টুকটাক কিছু কথা জেনে রাখি চলুন..

লিউকেমিয়াঃ

লিউকেমিয়া হলো হাড়ের মজ্জা সহ রক্ত ​​উৎপাদনকারী কোষগুলির ক্যান্সার। এতে অস্বাভাবিক শ্বেত রক্ত ​​কণিকা দ্রুত বৃদ্ধি পায়, দেহের স্বাভাবিক রক্ত কণিকাগুলো সংখ্যালঘুতে পরিণত হয় এবং এই ভারসাম্যহীনতা শরীরে সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।

 প্রকারভেদঃ

১. অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (ALL)
২. অ্যাকিউট মাইলয়েড লিউকেমিয়া (AML)
৩. ক্রনিক লিম্ফোসাইটিক লিউকেমিয়া (CLL)
৪. ক্রনিক মাইলোজেনাস লিউকেমিয়া (CML)

শিশুদের লিউকেমিয়ার ঝুঁকির কারণঃ

-লিউকেমিয়ার পারিবারিক ইতিহাস।
-ডাউন সিনড্রোমের মতো জিনগত ব্যাধি।
-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা।
-উচ্চ মাত্রার বিকিরণ
-তেজস্ক্রিয় পদার্থের সংস্পর্শে আনা।
-রক্তের বিভিন্ন রোগ

লক্ষণঃ

– একটানা ওজন হ্রাস
– অতিরিক্ত ক্লান্তি
– সামান্য পরিশ্রমে হাঁপিয়ে ওঠা
– অস্বাভাবিক ধরনের মাথা ব্যথা
– রক্তপাত
– ত্বকে রক্ত জমাট বাঁধা
– ঘনঘন জ্বর
– শ্বাসকষ্ট
– কাশি
– সারা শরীরে র‌্যাশ
– শরীরের কোনো অংশে অস্বাভাবিক ফোলা
– বমি

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষাঃ

– সম্পূর্ণ রক্ত গণনা
-এক্স-রে
-আল্ট্রাসাউন্ড
– অস্থিমজ্জা বা লিম্ফ নোড থেকে টিস্যুর নমুনা নিয়ে পরীক্ষা।
-সিটি স্ক্যান
-লাম্বার পাংচার
-লিভার ফাংশন টেস্ট
-ফ্লো সাইটোমেট্রি

 চিকিৎসাঃ

-কেমোথেরাপি
-রেডিওথেরাপি
-বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট

এছাড়াও লিউকেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের জন্য কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়..

– তাজা খাবার খাওয়াতে হবে।
– মোটা চামড়াযুক্ত ফলমূল, শাকসবজি খাওয়াতে হবে।
– কম পটাশিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে।
– বেকারির খাবার খাওয়ানো যাবেনা।
– পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
– মুখের যত্ন নিতে হবে।
– প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত দিতে হতে পারে।

 

লেখকঃ

ডা. মাহফুজার রহমান বাঁধন

শিশু বিভাগ, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.