শীত আরামদায়ক হলেও নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করে এই আবহাওয়া। এ সময় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সক্রিয় হয়ে ওঠে। শুধু শীতকালে ঠান্ডা লেগেই কানে সংক্রমণ হয় না। সারা বছরই কানে সংক্রমণ হতে পারে। তবে কেন এটি হয় এবং কীভাবে তা রোধ করা সম্ভব তা আগে থেকে জেনে রাখা ভালো।

কানের সংক্রমণ কেন হয়
সাধারণত কানের বাইরের দিকে বা মিডল ইয়ারেই সংক্রমণ হয়ে থাকে। ঠান্ডা লাগলে নাকের সর্দি কানের দিকে চলে গেলে সাধারণত সংক্রমণ হয়। যেকোনো বয়সের মানুষেরই এটি হতে পারে। এখন শরীর সুস্থ রাখতে অনেকেই সাঁতার কাটে। এ ছাড়া কান পরিষ্কার করতে ইয়ার বাড ব্যবহার করা হয়। ফলে খুব সহজেই কানে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে সেটি সংক্রমিত হতে পারে। এক্সটারনাল ইয়ারে তখন ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হওয়া খুব স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়।

এ ছাড়া খুব ঠান্ডা লেগে আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্টে সংক্রমণ হলে তা পৌঁছে যেতে পারে কানে। সাধারণত এ ক্ষেত্রে স্ট্রেপটোককাস নিউমোনিয়া বা হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ব্যাকটেরিয়া কানে প্রদাহ তৈরি করে। আর সেখান থেকেই কানের মাঝখানের অংশে তরল পদার্থ জমা হয়। শীতে ঠান্ডা, ধূমপান, সাইনাস সংক্রমণ বা আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণেও কানের সংক্রমণ হতে পারে। শীতকালে ঠান্ডা সর্দি লাগার পর শিশুদের কানে ব্যথা হয়। এ ক্ষেত্রে দ্রুত একজন নাক কান গলারোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। পরামর্শ না নিলে ঠান্ডা সর্দি মধ্য কর্ণে প্রদাহ তৈরি করে ফেলে এবং অল্প সময়ের মধ্যে, এমনকি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেখা যায় কানের পর্দা ফুটো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

কান পরিষ্কার রাখার জন্য বাইরে থেকে কিছু করার প্রয়োজন নেই। কান নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখতে সক্ষম; বরং পরিষ্কারের জন্য বারবার কটন বাড ব্যবহার করলে কানে সংক্রমণ হতে পারে। তার চেয়ে বরং রোজ গোসলের পরে তোয়ালে দিয়ে কানের যতটা অংশ পারেন মুছে নিন।

শীতে সংক্রমণে যা করবেন
শীতকাল এলেই যাদের কানের সংক্রমণে ভুগতে হয়, তাদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে:

» নিয়মিত নাক পরিষ্কার করা। এতে সংক্রমণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পথ বা নালি স্বাভাবিক থাকে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বাজারে প্রচলিত স্বাভাবিক স্যালাইন নাকে ড্রপ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

» শীতে রাতে বাইরে বেরোলেই পরতে হবে কানঢাকা পোশাক। বাঙালির চিরকালীন মাফলার, মাঙ্কি টুপি কিংবা এখনকার বাহারি কানঢাকা টুপির যেকোনো একটি সুবিধামতো পরে নিলেই হবে।

 

লেখক

ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফি

নাক-কান-গলারোগ বিশেষজ্ঞ ও হেড-নেক সার্জন

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.