কোলন হচ্ছে আমাদের অন্ত্র, যেখানে খাদ্য পরিপাকের মূল কাজ হয়। বৃহদন্ত্র বা কোলনের নিচের অংশে মল জমা হয়, সেটাকে বলা হয় রেকটাম। বৃহদন্ত্র বা রেকটামÑএই দুই অংশে ক্যানসার হলে তাকে বলা হয় কোলোরেক্টাল ক্যানসার। কোলোরেক্টাল ক্যানসার অনেকটা বংশগত। নিয়মিত মলত্যাগ না হওয়া, কমপক্ষে চার সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য বা পর্যায়ক্রমে ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য থাকা। পায়ুপথে বা মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া। পেটে অস্বস্তি ভাব, যেমন গ্যাস, পেট ফুলে থাকা, পেট মোচড়ানো, পেট ফাঁপা ভাব প্রভৃতি থাকা। ক্রমে ওজন কমে যাওয়া। রক্তশূন্যতা দেখা দেয়া। মলত্যাগের পরও পেট পুরোপুরি খালি হয়নি, এমন বোধ হওয়া। এগুলো সাধারণ লক্ষণ। ক্যানসার কোলন থেকে ছড়িয়ে শরীরের অন্য কোথাও গেলে, যেমন লিভারে গেলে ব্যথা হতে পারে। ফুসফুসে গেলে কাশি হতে পারে। এমনকি হাড়েও ছড়িয়ে পড়তে পারে ক্যানসার কোষ।

শুরুতেই ধরা পড়লে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের যথাযথ চিকিৎসা সম্ভব। এ ক্যানসার নিরাময়ে সার্জারি, রেডিয়েশন, কেমোথেরাপির যেকোনোটি বা কয়েকটি একসঙ্গে ব্যবহার করা যায়। কোলোরেক্টাল ক্যানসারের চিকিৎসায় নতুন নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি, যেমন অ্যান্টিবডি ব্যবহার, জিনথেরাপি, টিউমারের রক্ত চলাচলে বাধা দেওয়াÑএ রকম নানা পদ্ধতি ব্যবহƒত হচ্ছে।

জীবনযাপনে পরিবর্তনের মাধ্যমে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো যায়। প্রতিদিনের খাবারে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি পরিমাণে রাখা। ধূমপান ও মদ্যপান না করা। নিয়মিত ব্যায়াম করা ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন বজায় রাখা। পরিবারে কোলন ক্যানসার হয়েছে, এমন কেউ থেকে থাকলে নিয়মিত স্ক্রিনিং করা দরকার। প্রতিবছর মল পরীক্ষা করা, নিয়মিতভাবে সম্পূর্ণ অন্ত্রের পরীক্ষা করিয়ে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারেন।

 

ডা. মো. সেতাবুর রহমান

অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগ

ল্যাবএইড ক্যানসার সুপার স্পেশালিটি সেন্টার, পান্থপথ, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.