সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এক কাপ ধূমায়িত চা দিয়েই অনেকের দিন শুরু হয়। এতে শরীরে ফুরফুরে একটা ভাব আসে। আর চটপট কাজেও নেমে পড়া যায়। এক কাপ চা কেবল চা-ই নয় বরং সতেজতা, প্রাণশক্তিতে পূর্ণ একটি কাপ।

দিন শুরু করার জন্য চা একটি ভালো উপাদান। তবে চা পান শুধু দিনের শুরুতেই থেমে থাকে না, সারাদিনই চলমান থাকে। অনেকে আবার কফি ও পান করেন। আমরা কি জানি, চা ও কফি আপনার দাঁতের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে? কফি ও চা যদি আপনার জামাকাপড়কে দাগ দিতে পারে, তবে এটি আপনার দাঁতেও দাগ দিতে পারে।

চা ও কফি একটি বহুল ব্যবহৃত পানীয়। বিশেষজ্ঞরা জানান, চা ও কফি এমন একটা পানীয় যার উপকারিতার পাশাপাশি ক্ষতিকর দিকও আছে।  প্রতিদিন বেশ কয়েকবার চা ও কফি পান করলে যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়ে, তেমনি দাঁতও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

চা ও কফি উভয়ই প্রাকৃতিকভাবে ট্যানিন নামক পদার্থ অন্তর্ভুক্ত করে। যা দাঁতের এনামেলকে দাগ দিতে পারে এবং অবশেষে বিবর্ণ হতে পারে। চায়ে ফ্লোরাইডও থাকে, যা দাঁতের এনামেলকে মজবুত করে এবং দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। দুই কাপের বেশি  চা বা কফি দাঁতে দাগ পড়ার প্রক্রিয়াকে যথেষ্ট গতি দিতে পারে। এক কাপ চা বা কফি সেবনে যে স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে, তা অতিরিক্ত সেবনে পাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত খাওয়া যে কোনও সময় অভ্যাসে পরিণত হয় এবং সেই অভ্যাস একপর্যায়ে আসক্তিতে পরিণত হয়।

চায়ের অনেক রকমের বৈচিত্র্য রয়েছে। চায়ের রং যত গাঢ় হবে, দাগ পড়ার সম্ভাবনা তত বেশি হয়। চায়ের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক টি এবং ডার্ক কফিই সবচেয়ে বড় অপরাধী। দাঁতে দাগ এড়াতে আপনাকে চা পান করা বন্ধ করতে হবে এমন না। দুধ চা পান করার পর পানি দিয়ে কুলকুচি করে দাঁত ধুয়ে ফেলতে পারেন। এ ছাড়া কফি আপনার মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে পারে, যা দাঁত এবং এনামেল ক্ষয় হতে পারে। এতে আপনার দাঁত পাতলা এবং ভঙ্গুর হতে পারে।

এ ছাড়া কফির কারণে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ বা হ্যালিটোসিসের কারণ হতে পারে। কারণ, এটি জিহ্বায় লেগে থাকে। এই সমস্যাগুলো এড়াতে আপনি কফি পান করার আগে খাবার খান এবং পান করার পরে একটি জিহ্বা স্ক্র্যাপার এবং টুথব্রাশ ব্যবহার করুন। আপনি যদি কফিপ্রেমী হোন, তবে আতঙ্কিত হবেন না। কখনও কখনও দাঁতের ডাক্তাররা কফির দাগ থেকে মুক্তি দিতে পারেন। তাই  দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

করণীয়

১.  আপনি কতটা চা বা কফি খাচ্ছেন, কখন খাচ্ছেন এবং কিসের সাথে খাচ্ছেন সে সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন থাকুন।

২.  স্বাস্থ্যকর কোনো বিকল্পের সঙ্গে চা বা কফি সেবনের চেষ্টা করুন।

৩.  দিনের শুরুতে খালি পেটে চা খাওয়া বর্জন করুন

৪.  অতিরিক্ত চিনি, লেবু এবং প্রিজারভেটিভ মুক্ত চা সেবন করার চেষ্টা করুন।

 

লেখক:

ডা. পূজা সাহা

ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.