আমরা কাজ করার সময় অনেকেই খেয়াল করি না একইভাবে কতক্ষণ কাজ করছি। এর ফলে ওই কাজ থেকে উঠতে গিয়ে নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়ে যাই। বিশেষ করে যারা দীর্ঘসময় অফিসে বসে কাজ করেন তাদের ঘাড়, কোমর, হাঁটু বা কাঁধ ব্যথা হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। আর এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় অফিস সিনড্রোম। দিনের ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা চেয়ার-টেবিল বা কম্পিউটার-মোবাইলের সামনে বসেই বেশিরভাগ সময় কাটে অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষের। এর ফলে হাড় ও মাংসপেশিতে জড়তা তৈরি হয়। পর্যাপ্ত সূর্যের আলো শরীরে না পড়ার কারণে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি হয়। আস্তে আস্তে শরীর ক্লান্ত হতে থাকে। মাংসপেশি ও হাড়ের জড়তা প্রকাশ পায় ব্যথার মাধ্যমে। হাড়ের ক্ষয়, মাংসপেশির দুর্বলতাজনিত ব্যথা বয়স চল্লিশ পেরোলেই জেঁকে বসে।

কেন হয় : ভারী কাজ কিংবা বসা, শোয়া সঠিক ভঙ্গিমায় না করলেই তাদের ঘাড় ও কোমরে ব্যথা বেশি হয়। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হচ্ছে, দীর্ঘ সময় একইভাবে কাজ করলেই ব্যথাজনিত শারীরিক সমস্যা বেশি হয়। অনেকে ভাবেন, ভালো শক্ত কাঠের চেয়ারে বসে কাজ করলে ঘাড় বা কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আসলে তা নয়। বিষয় হলো, আপনি একই ভঙ্গিমায় কতটা সময় কাজ করলেন সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিকার : ব্যথা কমানোর প্রথম কার্যকর উপায় হলো একভাবে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা যাবে না। প্রতি এক ঘণ্টায় এক মিনিটের জন্য হলেও অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। সুযোগ থাকলে হালকা স্ট্রেচিং করা। অফিসে বসে খুব সাধারণ অথচ বিশেষ কিছু ব্যায়াম আছে, যা অফিসের চেয়ারে বসেই করা যাবে। এ ছাড়া সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে হাঁটতে হবে। অনেক কর্মজীবী বলেন, হাঁটতে সময় পান না।  অফিস থেকে বাসায় ফিরতে যেটুকু রাস্তা রিকশায় আসেন সেটুকু আজ থেকে হেঁটে আসুন অথবা সাধের প্রাইভেট কারে অফিসে এলেও যাওয়ার সময় হেঁটেই অফিস থেকে যান। ছুটির দিনটিতে সাঁতার কাটুন, দৌড়ান। শারীরিক শ্রমের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের আলোও শরীরে মাখুন। যাতে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দূর হয়। বয়স বৃদ্ধির আগে থেকেই হাড়ের যত্ন নিন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
ডা মোঃ বখতিয়ার
পরিচালক খাজা বদরুদদোজা মর্ডান হাসপাতাল
সফিপুর , কালিয়াকইর,গাজিপুর ।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.