আলঝেইমার হলো মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত রোগ। আলঝেইমার স্মৃতিহ্রাসের বড় কারণ। আলঝেইমার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্রেনের আরও অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। একে থামানো কঠিন।

লক্ষণ

স্মৃতিশক্তি লোপ : সাময়িকভাবে স্মৃতি লোপ পায়, যা স্বাভাবিক কর্মক্ষমতার ব্যাঘাত ঘটায়। যেমন চেনা মানুষের নাম, চেনা মুখ, জায়গার নাম, টেলিফোন নম্বর ইত্যাদি ভুলে যাওয়া।

কাজের বিভ্রান্তি : স্বাভাবিক কাজ করতে গিয়ে করতে না পারা। যেমন : রান্না করা, বাতি জ্বালানো, টিভি চালানো এবং হিসাব-নিকাশ করতে না পারা ইত্যাদি।

ভাষাগত সমস্যা :  শিশুদের মতো এলোমেলো করে বাক্য বলা, সময় ও স্থান চিহ্নিত করতে অপারগতা ।  সময়জ্ঞান না থাকা। হারিয়ে যাওয়া বা রাস্তা হারিয়ে অন্যখানে চলে যাওয়া। বারবার রাস্তা ভুলে যাওয়া। পরিচিত জায়গায় এসেও চিনতে না পারা। বিচার-বিবেচনার ক্ষমতা কমে যাওয়া। যেমন কোন অবস্থায় কী পোশাক পরবেন, রিকশায় উঠে কত ভাড়া দিতে হবে। অন্যমনস্ক হওয়া। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো জিনিস দিয়ে কী করতে হবে, তা অনেক সময়ই বুঝে উঠতে না পারা।

জিনিসপত্র হারিয়ে ফেলা। নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র অদ্ভুত সব জায়গায় রেখে বেমালুম ভুলে যাওয়া। মেজাজ ও স্বাভাবিক আচার-আচরণে পরিবর্তন। যখন-তখন মেজাজ পরিবর্তন হওয়া। খিটখিটে, রাগান্বিত হওয়া, দুর্ব্যবহার করা ইত্যাদি।

তবে ডিমেনশিয়ায় ভোগা ব্যক্তির ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। যেমন অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা, সন্দেহপ্রবণতা বা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়া এবং ক্রমেই ব্যক্তিত্ব হারিয়ে ফেলা। বয়সের সঙ্গে কর্মোদ্যম হারিয়ে ফেলা, ক্লান্তিবোধ করা, এ ক্ষেত্রে যে কোনো কাজের প্রতিই আকর্ষণ কমে যায়।

করণীয় : ডিমেনশিয়া সাধারণত ৬৫ থেকে ৮৫ বছর বয়সে হয়। তবে কম বয়সের লোকদেরও হতে পারে। কিছু লোকের নির্দিষ্ট ধরনের বংশগত গঠনের কারণে ডিমেনশিয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর খাবার ও জীবনযাপন পদ্ধতি ডিমেনশিয়া থেকে হয়তো রক্ষা করে।

 

ডা. এম. এস. জহিরুল হক চৌধুরী

অধ্যাপক (ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি)
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, ঢাকা।
চেম্বার: পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ (শ্যামলী শাখা, ঢাকা) ।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.