শীতকাল মানেই খুশকির বিড়ম্বনা। চুল আঁচড়ানোর সময় চিরুনিতে খুশকি, এর হাত থেকে রেহাই পায় না জামাকাপড় বা বালিশও। দেখতে খারাপ লাগার পাশাপাশি ব্যাহত হয় চুলের স্বাস্থ্যও। পড়তে হয় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে।

কেন হয়: খুশকি হওয়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মাথার ত্বক বা স্কাল্পের মৃত কোষগুলো নিয়মিতই ঝরে যায়। এগুলোই হলো খুশকি। শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকায় শরীরের বাকি সব অংশের ত্বকের মতো মাথার ত্বকেও শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়। ফলে খুশকি বেশি হয়।

শীতকালে শুষ্কতার কারণে চামড়া শুকিয়ে যায়, পুরোনো চামড়া উঠে নতুন চামড়া তৈরি হতে থাকে। আর এ মৃত চামড়া বা কোষগুলোকে আমরা খুশকি হিসেবে দেখতে পাই। শীতকালে অনেকেরই পানিপানের প্রবণতা কমে যায়। এতে মাথার ত্বক আরও শুষ্ক হয়।

চুলের কী ক্ষতি করে: খুশকি চুলের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। এর কারণে নানা রকমের সমস্যা তৈরি হয়। চুল পড়া, মাথার ত্বকে চুলকানি, অতিরিক্ত চুলকানির কারণে নখের আঁচড়ে মাথার ত্বকে সংক্রমণ ইত্যাদি নানা রকম সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় মাথার ত্বকে খুশকির পাশাপাশি ছোট ছোট দানার মতো কিছু গোটা হয়ে থাকে এবং রোগীর মাথার ত্বকে অতিরিক্ত চুলকানি হয়। অন্যান্য রোগের মতো খুশকিও বংশগত কারণে হতে পারে। অনেক সময় দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ বা অতিরিক্ত ক্লান্তিতে থাকলে খুশকি হতে পারে। মাথার ত্বক বুঝে খুশকির ধরনও নানা রকম হয়ে থাকে। অনেক সময় মাথার ত্বকে ব্রণের মতো হয়ে প্রচুর চুলকানি হয়। এসব ধকলের শেষ পরিণতি চুল পড়ে যাওয়া বা চুল পাতলা হয়ে যাওয়া।

খুশকি রোধে করণীয়: নিয়মিত ভালো মানের অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। তবে খুশকির মাত্রা খুব বেশি হলে কিছু ওষুধ আছে, যা কোনো বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে হবে।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি শীতকালীন ফলমূল খেতে হবে প্রচুর। মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। এতে যদি প্রতিদিন শ্যাম্পু করার প্রয়োজন হয়, তবে তাই করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। শ্যাম্পু শেষে যেহেতু চুল শুষ্ক হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, তাই কন্ডিশনার বা সিরাম ব্যবহার করতে হবে।

 

ডা. জাহেদ পারভেজ

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ

শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.