একজন টডলার হলো একজন শিশু যার বয়স ১৮ থেকে ৪০ মাস। ‘টডলার’ শব্দটি এসেছে টডল থেকে যা বলতে বুঝায় ছন্দহীন হাঁটা বা হাঁটতে শিখা, হাঁটতে হাঁটতে পড়ে যাওয়া। এক কথায় হাঁটি হাঁটি পা পা বললে মন্দ হয় না। ১৮ থেকে ৪০ মাস বয়সের শিশুরা বিভিন্ন ধরনের আঘাত পেয়ে থাকে। এ বয়সের শিশুরা এদিক ওদিক ছুটাছুটি ও দৌড়াদৌড়ি করে থাকে। এ সময় শিশুরা পড়ে যেয়েও দাঁতে ও চোয়ালে আঘাত পেতে পারে।

যে ধরনের আঘাত শিশুরা দাঁতে পেয়ে থাকে সেগুলো হলো :

(ক) কনকাশন-একটি দাঁতের সাপোর্টিং স্ট্রাকচারের উপরে আঘাত। কিন্তু এক্ষেত্রে দাঁত নড়ে নাই বা স্থানচ্যুতি ঘটে নাই। তবে পারকাশন করলে দাঁতে ব্যথা হয়ে থাকে। এ অবস্থায় দুই সপ্তাহের জন্য শিশুকে নরম খাবার খাওয়াতে হবে।
(খ) সাবলাক্সেসন- দাঁতের সাপোর্টিং স্ট্রাকচারগুলোতে আঘাতসহ দাঁত নড়ে যায়। কিন্তু দাঁতের কোন স্থানচ্যুতি ঘটে না।
(গ) ল্যাটারাল লাক্সেসন-দাঁতের সাপোর্টিং স্ট্রাকচারগুলোতে আঘাত লাগে এবং দাঁতের স্থানচ্যুতি ঘটে থাকে।

(ঘ) ইনট্রুশন- আঘাতের কারণে দাঁত সকেট এবং এলভিওলার হাঁড়ের ভিতর ঢুকে যায়। এ সময় দাঁত দেখতে ছোট দেখা যায়। ইনট্রুশনের কারণে দুধ দাঁতের নিচে যে স্থায়ী দাঁত উঠতে থাকে তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যদি সংক্রমণ দেখা দেয়।
(ঙ) অ্যাভালসন- এক্ষেত্রে আঘাতের কারণে দুধ দাঁত সকেটের সম্পূর্ণ বাহিরে চলে আসে। অ্যাভালসন সাধারণত সাত থেকে ৯ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। তবে টডলারদের ক্ষেত্রেও অ্যাভালসন হতে পারে।
(চ) ফ্র্যাকচার : আঘাতের কারণে দাঁতের এনামেলের ফ্র্যাকচার হতে পারে বা সম্পূর্ণ দাঁতকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

(ছ) এছাড়া শিশুর ১৮ থেকে ৪০ মাস বয়সের মধ্যে আঘাতের কারণে বা পড়ে যাওয়ার কারণে ঠোঁট বা মুখের যে কোনো অংশ কেটে যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে কসমেটিক সেলাই দিতে হবে।

তাই শিশু দাঁতে আঘাত পেলেই তা কতটা গুরুতর তা জানতে হবে। আর এর উপরই নির্ভর করে এর পরবর্তী চিকিৎসা ব্যাবস্থাপনা। এই বয়সের শিশুদের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটা খুবই কমন একটি ঘটনা। তাই এমন হলে দ্রুতই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। তিনি রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসাটি দিতে পারবেন। তাই এসময়ে হাতুরের কাছে গিয়ে অজথা সময় নষ্ট না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনার শিশুর দাঁত ও মাড়িকে সুরক্ষিত করুন।

 

ডা. মো. ফারুক হোসেন

মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.