শিশুরা কোনো দুর্ঘটনার শিকার হলে ঘাবড়ে না গিয়ে মাথা ঠাণ্ডা রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। দেখে নেয়া যাক কিছু প্রাথমিক চিকিৎসার নিয়ম।

কেটে যাওয়া: পড়ে গিয়ে বা ধারালো কোনো জিনিসে শিশুর শরীরের কোথাও কেটে গেলে প্রথমে বাসায় সামলে নেয়া যায়। তবে গভীর কাটা বা ক্ষত হলে এবং রক্তপাত বন্ধ না হলে তাৎক্ষণিকভাবে মেডিকেল ব্যবস্থাপনা লাগবে।

কী করা উচিত: ক্ষত গভীর হলে অ্যামবুলেন্স ডাকতে ডাকতে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করুন। কাটা স্থান পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় বা গজ-ব্যান্ডেজ দিয়ে চেপে ধরুন। কাটা স্থান ওপরের দিকে তুলে ধরুন, তাতে রক্ত কম ঝরবে। রক্তপাত বন্ধ হলে নতুন ব্যান্ডেজে ওই স্থান মুড়িয়ে দিন। রাবার বা টরনিকেট পেঁচিয়ে না বাঁধাই ভালো।

কখন মেডিকেলে নিতে হবে: কাটা খুব গভীর ও বেশ ফাঁক হলে। চাপ দেয়ার পরও রক্ত বন্ধ না হলে। পশু বা মানুষের কামড়ে কাটলে। আঙুলের মাথা বা দেহের কিছু অংশ পুরো কেটে গেলে ওই অংশ তাড়াতাড়ি প্লাস্টিকের ব্যাগে ঢুকিয়ে বরফের কোনো পাত্রে রেখে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

পুড়ে যাওয়া: শিশু মারাত্মকভাবে পুড়ে গেলে দ্রুত হাসপাতালে নিন। পোড়া অংশ থেকে কাপড়চোপড় সরিয়ে নিন। ব্যথা উপশম না হওয়া পর্যন্ত পোড়া অংশে ঠাণ্ডা পানি (বরফ নয়) ঢালুন। পোড়া স্থান আলতোভাবে গজ-ব্যান্ডেজে ঢেকে দিন। শিশুর জ্ঞান থাকলে ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল দেয়া যাবে। পোড়া স্থানে মলম, ঘি বা অন্য কিছু লাগাবেন না। ফোসকা হলে ভাঙার চেষ্টা করবেন না।

জরুরি মেডিকেল ব্যবস্থাপনা: শরীরের বেশি অংশ পুড়ে গেলে। আগুন লেগে বা বৈদ্যুতিক কেব্লে কিংবা কেমিক্যালসে পুড়লে। মুখ, হাত, পা, জয়েন্ট বা যৌনাঙ্গ পুড়ে গেলে।

প্রতিরোধ: মোমবাতি, হিটার কিংবা গরম ইস্ত্রি ও গরম পানি ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। শিশুকে গোসল করানোর আগে বাথটাবের পানি নিজে ছুঁয়ে দেখুন। রান্নার সময় রান্নাঘরে শিশুকে খেলতে দেবেন না। আগুন লাগলে দ্রুত ঘর থেকে বের হওয়ার ব্যবস্থা রাখুন।

 

অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী

সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.