খাবারের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগজীবাণু শিশুর শরীরে প্রবেশ করে। এতে শিশু অসুস্থ হয়। তাই শিশুর খাবার যেন বাসি ও নষ্ট না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। কিছু নিয়ম মেনে চললে খাবার নিরাপদ রাখার পাশাপাশি শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়।

পরিচ্ছন্নতা: প্রতিবার সাবানপানিতে হাত ধুয়ে খাবার তৈরি ও পরিবেশন করতে হবে; শিশুদের শৌচকার্য করার পর ও পশুপাখির পরিচর্যার পর হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে; সব সময় ধোয়া বাসনপত্রের ব্যবহার করা উচিত। রান্নাঘর ও খাদ্যসামগ্রী যেন মাছি ও পোকামাকড়মুক্ত থাকে।

খাবার ব্যবস্থাপনা: অন্যান্য খাবার থেকে কাঁচা সামুদ্রিক মাছ ও মাংস আলাদা রাখতে হবে। কাঁচা খাবার কাটার জন্য আলাদা ছুরি ও বোর্ড ব্যবহার করতে হবে। ঢাকনাযুক্ত পাত্রে রান্না করা খাবার রাখতে হবে। মাংস, ডিম ও সামুদ্রিক খাদ্য ভালো করে সেদ্ধ করতে হবে। খাবার আবার গরম করার সময় ভালোভাবে গরম করতে হবে, সম্ভব হলে ভালো করে ফুটিয়ে নেয়া উচিত।

সংরক্ষণ: রান্না করা খাবার ঘরের তাপমাত্রায় দুই ঘণ্টার বেশি রাখা যাবে না। রেফ্রিজারেটরে লম্বা সময় খাদ্য সংরক্ষণ করা উচিত নয়। যেমন মাংস এক থেকে দুই দিনের বেশি সংরক্ষণ না করা।

সতর্কতা: সব সময় টাটকা খাবার নির্বাচন করুন। শিশুদের পাস্তুরিত দুধ পান করাতে হবে। কাঁচা ফলমূল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার মেয়াদোত্তীর্ণ কি না, তা দেখে নিতে হবে। শিশুর খাবার বেশ ভালোভাবে রান্না করতে হবে। বিশেষত মাংস ও পোলট্রিজাত খাবার রান্নার সঙ্গে সঙ্গেই খেতে দেয়া উচিত। যে খাবার তৈরির পর পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত রেখে দিতে হচ্ছে, তা অবশ্যই গরম করে বা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। যেকোনো কাঁচা মাংসেই জীবাণু থাকতে পারে। কাঁচা মাংস রাখার বাসনপত্রও ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেয়া। খাবার তৈরির স্থান সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখা। খাবার সব সময় ঢেকে রাখা উচিত। পানি ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে পরিষ্কার পাত্রে সংরক্ষণ করুন। যদি পানি ফোটানোর ব্যবস্থা না থাকে, তবে পানীয় জল পরিষ্কার ঢাকনা দেয়া পাত্রে জমা রাখা এবং ব্যবহারের আগে দুদিনের জন্য সূর্যকিরণে রেখে দেয়া দরকার।

 

অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী

সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.