পবিত্র রমজান মাসে পানিশূন্যতার একটা আশঙ্কা রয়েই যায়। তার ওপর আবার ক্রমেই তপ্ত হয়ে উঠছে আবহাওয়া। রোজা রেখে কেউ কেউ সাহ্‌রিতে অনেক পানি খেয়ে থাকেন, আবার কেউ ইফতারের শুরুতেই কয়েক গ্লাস পানি খেয়ে ফেলেন। সুস্থ থাকার জন্য পানির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তবে রোজার সময় পানি কীভাবে খাবেন, তা জানাটা জরুরি।

ইফতার থেকে সাহ্‌রি পর্যন্ত অন্তত দুই লিটার বিশুদ্ধ, নিরাপদ পানি পান করা নিশ্চিত করতে হবে। সে ক্ষেত্রে ইফতার থেকে সাহ্‌রি বা রাতে ঘুমানোর আগপর্যন্ত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পরপর ১০০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ মিলিলিটার পানি খাওয়া দরকার। বিশেষ করে তারাবিহ নামাজের আগে ও পরে বোতলে পানি রেখে এই সর্বমোট পানি খাওয়ার পরিমাণ নিশ্চিত করা যায়।

এ মৌসুমে রোজায় আপনার শরীর যেন হাইড্রেটেড থাকে, ত্বক যেন বিবর্ণ বা মলিন না হয়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা যেন না বাড়ে, কিংবা গ্যাসের সমস্যা যাতে না হয়, তার একটি বড় সমাধান হচ্ছে পর্যাপ্ত পানি পান। পানি ছাড়াও অন্যান্য তরল পান করা যেতে পারে। তরল হিসেবে ডাবের পানি, লেবুর শরবত ও মৌসুমি ফল চিনি ছাড়া জুস করে খেলে এ পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। দুধও এ তরল থেকে বাদ পড়ছে না। দুধে যেমন প্রোটিন ও ফ্যাট পাওয়া যায়, তেমনি ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম অন্যান্য খনিজ লবণের ভালো উৎস। তবে কোল্ড ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস, যেকোনো রঙিন পানীয় এবং চা ও কফি রোজায় এড়িয়ে চলবেন। এগুলো পানিশূন্যতা তো দূর করেই না, বরং ক্ষতিকর।

শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা রোজা রাখলে তাঁদের পানি পান পর্যাপ্ত হচ্ছে কি না, সেদিকে লক্ষ রাখা জরুরি।

সতর্কতা

বেশি গরমে যেমন রান্নাঘরে বা শারীরিক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে প্রতি এক থেকে দুই ঘণ্টা পরপর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মতো ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়া উচিত। সাহ্‌রিতে যদি কিছু না খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তবু সাহ্‌রিতে উঠে পানি বা তরলজাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। এতে পানিশূন্যতার ঝুঁকি কমবে। রোজা রাখা অবস্থায় যদি কারও বমি বা পাতলা পায়খানা হয়, তাহলে রোজা ভেঙে খাবার স্যালাইন খেতে হবে। যাঁরা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খান, যাঁদের কিডনির সমস্যা আছে বা হার্ট ফেইলিউর আছে, তাঁদের রোজা ও পানি পানের পরিমাণের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

ডা.এম এস আলম

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.