হার্ট অ্যাটাক একধরনের মেডিকেল ইমার্জেন্সি; সঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো না হলে বা হাসপাতালে ভর্তি না করালে মৃত্যুর ঝুঁকি পর্যন্ত থাকতে পারে। এ কারণে হার্ট অ্যাটাকের ব্যাপারে সচেতন থাকা জরুরি। কিছু পূর্ব লক্ষণ বা বিপদচিহ্ন জেনে রাখা উচিত, যেসব দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

১. বুকব্যথা

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, গবেষণায় অংশগ্রহণকারী হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের প্রায় ৪০ শতাংশ অনেক আগে থেকে এবং ৬৮ শতাংশের কিছুদিন আগে থেকে হালকা ব্যথা ছিল। সুতরাং বুকব্যথা হালকা করে দেখার সুযোগ নেই।

২. বুকে ভারবোধ

ওই একই গবেষণায় দেখা গেছে, ৪৪ শতাংশ রোগীর বুকে ভারবোধ ছিল। বুকে ভারবোধ রোগীরা বিভিন্নভাবে প্রকাশ করেন, বুকে চাপ বা অস্বস্তি বোধও হতে পারে। অনেকে ভারী কাজ করার পর বা দ্রুত হাঁটার পর বা সিঁড়ি বেয়ে ওঠার পরও বুকে ভারবোধ করতে পারেন।

একই গবেষণায় ৪২ শতাংশ রোগী আগে বুক ধড়ফড়ের লক্ষণ ছিল। সুতরাং এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিপদচিহ্ন। এ ক্ষেত্রে রোগী অনুভব করেন, হৃৎপিণ্ড খুব দ্রুত লাফাচ্ছে। অনেকে মাঝেমধ্যে হার্টবিট মিসের কথাও বলেন।

৪. শ্বাসকষ্ট বা হাঁপিয়ে যাওয়া

এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিপদচিহ্ন। অনেকে বলেন, ভারী কাজ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে যান, একেও হালকাভাবে দেখা উচিত নয়। অনেকের আবার বিশ্রামরত অবস্থায়ও এ রকম হতে পারে।

৫. বুক জ্বালাপোড়া

বুক জ্বালাপোড়া শুনলেই অনেকে গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা ভাবেন আর দিনের পর দিন গ্যাসের ওষুধ খেয়ে যান। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গ্যাসের সমস্যা হলেও যদি দেখা যায় ওষুধে কাজ হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

৬. দুর্বলতা বা ক্লান্তিবোধ

দুর্বলতা বা ক্লান্তিবোধ অনেক সমস্যা বা রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক হার্ট অ্যাটাকের রোগীর শুরুর দিকে এ রকম ক্লান্তিবোধ হয়। সুতরাং এটিও একটি বিপদচিহ্ন হতে পারে।

এর পাশাপাশি আরও কিছু লক্ষণ বা বিপদচিহ্ন মাথায় রাখতে হবে। যেমন মাথা ঝিমঝিম, পা ফোলা বা পা ভারী বোধ হওয়া, বমিভাব, অনিদ্রা, দুশ্চিন্তা। এসব প্রথম ছয়টির মতো অবশ্য বেশি পরিলক্ষিত হয় না। এখনো পর্যন্ত দেখা গেছে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রে পূর্ব লক্ষণ বা বিপদচিহ্ন বেশি দেখা যায়। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।

অনেক রোগীর কোনো বিপদচিহ্ন ছাড়াই হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয়ে যায়। তাঁদের অনেকে আবার এসব বিপদচিহ্ন বুঝতে পারেন না বা অগ্রাহ্য করেন। হার্ট অ্যাটাকে যেহেতু মৃত্যুঝুঁকি থাকে, সুতরাং এসব ব্যাপার অবশ্যই আমলে নেওয়া উচিত।

মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.