▪ যক্ষ্মা শুধু ফুসফুসে হয় না, যক্ষ্মার জীবাণু যে কেবল ফুসফুসকে আক্রান্ত করে তা নয়, এটি মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে, ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি, হাড়সহ দেহের যেকোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রমণ হতে পারে।

তবে ফুসফুসে যক্ষ্মা সংক্রমের হার সবচেয়ে বেশি হওয়ায় সরকারি সচেতনতামূলক প্রচারণায় সেটাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।

যক্ষ্মা হচ্ছে একটি বায়ুবাহিত ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক ব্যাধি যেটা মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস জীবাণুর সংক্রমণে হয়ে থাকে।

আর এই জীবাণু যেকোন অঙ্গেই সংক্রমিত হতে পারে।

 কারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন?

দেশের মোট জনসংখ্যার একটি অংশ যক্ষা রোগের জীবাণু বহন করে, তবে শরীরে জীবাণু থাকা মানেই এই নয় যে ব্যক্তি রোগে আক্রান্ত।

তবে জীবাণুর ধারক নিজে আক্রান্ত না হলেও তার মাধ্যমে অন্যের শরীরে যক্ষ্মা ছড়াতে পারে। আর সেটা যেকোন অঙ্গেই হতে পারে।

এই জীবাণু থেকে তাদেরই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল।

এছাড়া ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের এই জীবাণুতে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

* এছাড়া পরিবেশ দূষণ,

* দরিদ্রতা,

* মাদকের আসক্তি,

* অপুষ্টি,

 

শরীরের অন্য কোন অঙ্গে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ কী?

ফুসফুসে যক্ষ্মার জীবাণু সংক্রমিত হলে টানা কয়েক সপ্তাহ কাশি, কফের সাথে রক্ত যাওয়ার মতো সাধারণ কিছু লক্ষণের ব্যাপারে কম-বেশি প্রায় সবারই জানা।

 

শরীরের অন্যান্য অংশে যক্ষ্মার জীবাণু আক্রান্ত হলে সেটা বোঝার উপায় কি?

শরীরের যে অংশে যক্ষ্মার জীবাণু সংক্রমিত হবে সেই অংশটি ফুলে উঠবে। যেমন গলার গ্লান্ড আক্রান্ত হলে গলা ফুলবে, মেরুদণ্ডে আক্রান্ত হলে পুরো মেরুদণ্ড ফুলে উঠবে।

ফোলা অংশটি খুব শক্ত বা একদম পানি পানি হবে না। সেমি সলিড হবে। ফোলার আকার বেশি হলে ব্যথাও হতে পারে।

লিভারে যক্ষ্মা হলে পেটে পানি চলে আসে, তাই পেটও অস্বাভাবিক ফুলে যায়।

মস্তিষ্কে সংক্রমিত হলে সেখানেও পানির মাত্রা বেড়ে যায়। অর্থাৎ মানুষের মস্তিষ্ক যে ইডিমা বা পানির মধ্যে থাকে, সেটার পরিমাণ বেড়ে যায়।

এছাড়া চামড়ায় বা অন্য যেখানেই হোক না কেন সেই অংশটা ফুলে ওঠে।

এছাড়া ক্ষুধামন্দা, হঠাৎ শরীরের ওজন কমে যাওয়া, জ্বর জ্বর অনুভব হওয়া, অনেক ঘাম হওয়া, ইত্যাদি যক্ষ্মার কিছু সাধারণ লক্ষণ।

করণীয় কী?

উপরের লক্ষণগুলোর দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে ।

ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে যে ব্যক্তি যক্ষ্মায় আক্রান্ত কি-না।

সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে যক্ষ্মা পুরোপুরি সেরে যায়, তাই  দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে

যক্ষ্মা দীর্ঘমেয়াদি রোগ হওয়ায় এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ খেতে হয়। যেটা ৬ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে সেটা ১২, ১৮ এবং ২৪ মাসের ও হয়ে থাকে।

 

ডা. আবুল ফয়সাল মোহাম্মদ নুরুদ্দীন চৌধুরী

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.