১০ অক্টোবর, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘মানসিক স্বাস্থ্য সর্বজনীন মানবাধিকার’।

ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ মেন্টাল হেলথ (ডব্লিউএফএমএইচ) মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ১৯৯২ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে ১০-ই অক্টোবরকে “বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস” হিসাবে উদযাপন করে।

সমস্ত মানুষ স্বাধীনভাবে জন্মগ্রহণ করে এবং সবার মর্যাদা ও অধিকারে সমান। বিশ্বজুড়ে প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষ একটি মানসিক ব্যাধি নিয়ে বসবাস করছে। বাংলাদেশে ২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ মানসিক রোগে ভুগছে। কিন্তু মাত্র আমাদের দেশে মোট বাজেটের 0.৪৪% মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বরাদ্দ করা হয়।

মানসিকভাবে অসুস্থ রোগীদের মানবাধিকার বিভিন্নভাবে লঙ্ঘন হচ্ছে-

পারিবারিক সহযোগিতার অভাব,

শারীরিক নির্যাতন ও যৌন নির্যাতন,

বৈষম্য,

নেতিবাচক ধারণা,

শিক্ষাগত বঞ্চনা,

বিবাহবিচ্ছেদ,

মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে অক্ষম,

সম্পত্তির বঞ্চনা,

বেকারত্ব এবং

কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য।

অধিকার সংরক্ষণ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও প্রচারের জন্য সরকার, সমাজ এবং পরিবারকে নিম্নলিখিত লক্ষ্যগুলির জন্য নিম্নলিখিত পথ অবলম্বন করতে হবে-

১। কার্যকর নেতৃত্ব ও সুশাসনকে শক্তিশালী করা।

২। একটি তৃণমুল পর্যায়ে সমন্বিত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে হবে।

৩। তথ্য ব্যবস্থা, প্রমাণ, এবং গবেষণা শক্তিশালী করুন।

৪। সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ।

৫। মানসিক স্বাস্থ্য কৌশল, ক্রিয়াকলাপ এবং চিকিত্সা, প্রতিরোধ এবং প্রচারের জন্য হস্তক্ষেপগুলি অবশ্যই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক মানবাধিকারের কনভেনশনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে৷

৬। চিকিত্সা, প্রতিরোধ, এবং প্রচার বৈজ্ঞানিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে এবং সাংস্কৃতিক বিবেচনা বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।

৭। শৈশব থেকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত জীবনের সমস্ত পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য নীতি, পরিকল্পনা এবং পরিষেবাগুলি গ্রহণ করা উচিত।

৮। মাল্টিসেক্টরাল পদ্ধতি।

প্রতিটি মানুষের মতো মানসিকভাবে অসুস্থ রোগীরও মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। সুতরাং, এটি আবার আমাদের সকলকে মনে করিয়ে দিয়েছে যে “মানসিক স্বাস্থ্য একটি সর্বজনীন মানবাধিকার”।

 

লেখকঃ

ডা. মো. রশিদুল হক

সহকারী অধ্যাপক
মনোরোগ বিভাগ
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.