বন্ধ্যাত্বের সমস্যা নিয়ে অনেক সময় দেখা যায়, শুধুমাত্র নারী রোগী চিকিৎসক দেখাতে আসেন। অথচ বন্ধ্যাত্ব এমন একটা রোগ যেখানে স্বামী-স্ত্রী দুজনই দায়ী। এ জন্য চিকিৎসার জন্য স্বামী ও স্ত্রী দুজনকেই আসতে হবে।

সন্তান গর্ভে ধারণের জন্য স্বামীর শুক্রাণুর সঙ্গে স্ত্রীর ডিম্বানু সমানভাবে প্রয়োজন। আমাদের সমাজে নারীর বন্ধ্যাত্ব যেভাবে প্রকাশ করা হয়, ঠিক পুরুষের ক্ষেত্রে সেভাবেই লুকানো হয়। এর বড় কারণ পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কোনো উপসর্গ থাকে না।

সবকিছু স্বাভাবিক থাকার পরও পুরুষের বন্ধ্যাত্ব থাকতে পারে। এ জন্য পুরুষেরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে সিমেন অ্যানালাইসিস বা বীর্য পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। বীর্যে কতটুকু শুক্রাণু আছে, সন্তান জন্মদানের মতো শুক্রাণু আছে কিনা, শুক্রাণুর গঠনগত ঠিক আছে কিনা এবং প্রজনন সক্ষমতা আছে কিনা তা দেখা হয় পরীক্ষার মাধ্যমে।

বাহ্যিকভাবে সব ঠিক থাকার পরও আমাদের কাছে আসলে পরীক্ষা করে দেখা যায়, পুরুষের শুক্রাণুতে সমস্যা রয়েছে। এ হার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। পুরুষরা যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত থাকলে টিউব বন্ধ হয়ে যায়। এক্ষেত্রেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।

এ ছাড়া শারীরিক কোনো অক্ষমতা থাকে বা ওষুধপত্র খেতে থাকলে, সেক্ষেত্রেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। পুরুষের বন্ধ্যাত্ব নির্ণয়ে তার রোগের স্পেশাল ইতিহাস জানতে হবে। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে শারীরিক সক্ষমতা, শুক্রাণুর গঠন, হরেমোনাল কোনো সমস্যা আছে কিনা, তা দেখতে হবে।

সিমেন অ্যানালাইসিস ছাড়াও ডায়াবেটিস, হাইপো থাইরয়েডের কারণেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। এ জন্য সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পরীক্ষা করতে হবে।

সবকিছু মাথায় রেখেই একজন পুরুষকে নিয়ে চিকিৎসককে এগোতে হয়। এ জন্য বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা করাতে এলে স্ত্রীকে তার মায়ের সঙ্গে পাঠাবেন না। একাও আসবেন না। স্ত্রীকে সঙ্গে করে আসবেন। মনে রাখবেন, স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ প্রচেষ্টার ফসল একটি সন্তান।

 

লেখক:

ডা. ফারজানা দীবা

প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ
সহযোগী অধ্যাপক, গাইনি অ্যান্ড অবস
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.