সাইনোসাইটিস বা সাইনাসে প্রদাহ আমাদের কাছে সুপরিচিত একটি রোগ। বিভিন্ন ধরনের জীবাণু সংক্রমণ সাইনোসাইটিসের কারণ। ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি সাইনোসাইটিস ১২ সপ্তাহ বা এর বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে।

পরিণতি: ক্রনিক সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত হলে রোগী মাথাব্যথা ও অন্যান্য উপসর্গের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অবসাদ ও ক্লান্তিবোধে ভোগেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটিকেই একসময় শরীরের প্রধান সমস্যা বলে মনে হয়। সেই সঙ্গে মুখমণ্ডলে ও মাথা-কপালজুড়ে ব্যথা থাকে, নাক বন্ধ থাকে, চাপ দিলে মুখমণ্ডলে ব্যথা করে, মেজাজ খিটখিটে থাকে এবং সারাক্ষণ বিরক্ত লাগে।

চিকিৎসা: সাধারণত সাইনোসাইটিস হলে চিকিৎসকেরা নাকে স্যালাইন ইরিগেশন ও বিভিন্ন ধরনের নাজাল স্প্রে ব্যবহার করতে দেন। সংক্রমণ হলে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যায়। কখনও কখনও নাকের সেপটাম বাঁকা হলে বা পলিপজাতীয় কিছু থাকলে তার চিকিৎসা করা হয়। এর বাইরে আরেকটি চিকিৎসা হলো অস্ত্রোপচার।

বর্তমানে বাংলাদেশে সাইনাসের আধুনিক চিকিৎসা, যেমন ফাংশনাল এন্ডোস্কপিক সাইনাস সার্জারি (ফেস) নিয়মিত হচ্ছে। এ ধরনের অস্ত্রোপচারে (অপারেশন) কোনো কাটাছেঁড়া লাগে না, ফলও খুবই ভালো। তবে ফেসের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষিত দক্ষ সার্জনের দরকার হয়।

অস্ত্রোপচারের ফল: যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, একদল চিকিৎসক পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পেয়েছেন, সাইনাস অস্ত্রোপচারের পর রোগীদের কাজের সামর্থ্য বেড়ে যায়। এছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অস্ত্রোপচারের পর ক্লান্তি ও অবসাদের অনুভূতি চলে গেছে।

তাই দীর্ঘমেয়াদি সাইনোসাইটিসের রোগীদের প্রয়োজন দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচার করা যায়। এখন বাংলাদেশে রাজধানীর প্রায় সব বড় হাসপাতালে এ অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে।

 

অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী

ইএনটি বিভাগীয় প্রধান

আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.