কৃত্রিম সুইটেনার বা মিষ্টি হলো চিনির বিকল্প, যা রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত না করে খাবার ও পানীয়কে মিষ্টি করতে ব্যবহƒত হয়। এগুলোকে চিনির বিকল্প, কম ক্যালরি মিষ্টি বা অপুষ্টিকর মিষ্টিও বলা হয়। এগুলো গতানুগতিক চিনির চেয়ে অনেক গুণ বেশি মিষ্টি হওয়ায় খাবারে পরিমাণে কম লাগে। চিনির তৈরি খাবারের চেয়ে কৃত্রিম মিষ্টি দিয়ে তৈরি খাবারে কম ক্যালরি থাকতে পারে।

কৃত্রিম চিনি: প্রচলিত সুইটেনারগুলো হলো অ্যাসপার্টাম, দানাদার স্যাকারিন-হারমেসেটাস ও সুক্রলোজ এসেসালফেম।

গবেষণা বলছে, কৃত্রিম মিষ্টি, যা ওজনাধিক্যপূর্ণ ব্যক্তিরা চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করেন, তা তাদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। ডায়াবেটিসের যেসব রোগী কৃত্রিম চিনি খান, তারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সফল হতে পারছেন না। তাদের অধিকাংশের পক্ষেই ওজন কমানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন ডায়াবেটিস রোগীদের কৃত্রিম চিনি খেতে নিরুৎসাহিত করে আসছে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যে কৃত্রিম মিষ্টি গ্রহণের বর্তমান মাত্রা নিরাপদ। অবশ্য ফেনাইলকেটোনুরিয়া (একটি বিরল বিপাকীয় ব্যাধি) আক্রান্ত ব্যক্তিদের অ্যাসপার্টামযুক্ত মিষ্টি এড়িয়ে চলতে বলা হয়।

ডায়েট কোলা: ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাধারণ কোলার (যেকোনো সোডা) পাশাপাশি ডায়েট কোলাকেও নিরুৎসাহিত করা হয়। কারণ সোডায় অতিরিক্ত মিষ্টি, ক্যালরি ও ক্যাফেইন থাকে।

করণীয়: আদর্শ ওজন, কোলেস্টেরল, রক্তে শর্করা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্য খেতে হবে, যাতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, চিনি ও লবণ কম থাকে। সবুজ সবজি, ফল, পূর্ণ দানা, ডাল, মাংস, মাছ, দুগ্ধজাতীয় পণ্য ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর ডায়েটের অংশ। মিষ্টি ও প্রকৃত শর্করাযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। সোডাযুক্ত মিষ্টি খাবার পরিহার করা উচিত। ক্যালরি পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এতৎসত্ত্বেও কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত  নিলে ডায়াবেটিস চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। উপাদানসহ সংশ্লিষ্ট সুইটেনারের মোড়কের তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করতে হবে

 

ডা. শাহজাদা সেলিম

সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বিএসএমএমইউ

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.