আমাদের অনেকে জীবনের একটা পর্যায়ে ঘাড়ের ব্যথায় ভুগে থাকেন। যাকে মেডিকেলের ভাষায় সারভাইক্যাল পেইন বলে।

এটা দুই ধরনের

» লোকাল বা নির্দিষ্ট জায়গার ব্যথা।
» রেফার্ড পেইন বা দূরে ছড়িয়ে পড়া ব্যথা

 

কারণ

» সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস।
» সারভাইক্যাল রিবস।
» সারভাইক্যাল ক্যানেল সরু হওয়া।
» হারনিয়েটেড ডিস্কের নার্ভের ওপর চাপ দেওয়া।
» মাংসপেশি, হাড়, জয়েন্ট, লিগামেন্ট, ডিস্ক ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি।
» হাড় ও তরুণাস্থি ক্ষতিগ্রস্ত।
» অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ।
» হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া।
» সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি।

লক্ষণ
» ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত
ছড়িয়ে পড়তে পারে।
» এক বা উভয় হাতে ব্যথা, অনুভূতি দুর্বল হওয়া, অবশ ভাব লাগা, কামড়ানোর মতো অনুভূতি হওয়া।
» ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, যা পর্যায়ক্রমে বেড়ে যায়।
» ঘাড় সামনে-পেছনে বা ডান-বাম করলে ব্যথা হওয়া।
» হাঁচি-কাশি বা সামনে ঝুঁকে কাজ করলে ব্যথা লাগা।
» মাথাব্যথা হওয়া, যা পেছন থেকে শুরু হয়ে সামনের দিকে চলে আসে।
» দুর্বল লাগা।
» ঘুমাতে না পারা।
» ব্যথার সঙ্গে জ্বর, ঘাম ও শীত শীত ভাব বা শরীর কাঁপানো।

চিকিৎসা
ঘাড়ব্যথার চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে। এ জন্য ব্যথা ও অন্যান্য উপসর্গ নিরাময় এবং ঘাড়ের মুভমেন্টগুলো স্বাভাবিক করতে হবে।

প্রদাহরোধী ওষুধ সেবন: চিকিৎসকের পরামর্শে ও ব্যবস্থাপনায় প্রদাহরোধী ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা: এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন আধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতি হলো ফিজিওথেরাপি। এটি ব্যথার কারণের ওপর নির্ভর করে ঠিক করা হয়। এখানে বিভিন্ন স্ট্রেচিং, স্ট্রেনদেনিং, ম্যানুয়াল টেকনিক অ্যাপলিকেশন, ইলেকট্রোথেরাপি ব্যবহার করে ঘাড়ের ব্যথা ও এর কারণগুলোর চিকিৎসা করা হয়। তবে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা অবশ্যই একজন গ্র্যাজুয়েট ফিজিওথেরাপিস্টের (বিপিটি) তত্ত্বাবধানে নিতে হবে। না হলে স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করতে হতে পারে।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা: ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা বা অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা নিতে হবে।

 

সাজ্জাদ হোসেন

কনসালট্যান্ট, ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড স্পাইন কেয়ার, চট্টগ্রাম ।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.