কেউ অন্যমনস্ক হয়ে খাওয়ার সময় মাছের কাঁটা বা মাংসের ছোট হাড় গলায় আটকে যেতে পারে। অনেক সময় ছোট শিশুরা খেলার সময় কোনো কিছু মুখে দিলে তা গলায় আটকে যায়। এটি একটি মেডিকেল ইমারজেন্সি। এ অবস্থায় রোগীকে যতটা দ্রæত সম্ভব হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অথবা কাছের নাক কান গলা বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে। নয়তো এ ছোট ঘটনা থেকে মহাবিপদ এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

কী কী ধরনের বস্তু সাধারণত গলায় আটকায়? ধাতব মুদ্রা বা পয়সা, খেলনার ছোট ছোট অংশ, বাঁধানো দাঁত, মাছের কাঁটা, মাংসের ছোট হাড়, সুই, সেফটিপিনÑএমন আরও অনেক কিছু। গলবিল ও খাদ্যনালির সংযুক্ত স্থান হলো খাদ্যনালির সবচেয়ে সংকীর্ণ জায়গা। এখানেই বেশির ভাগ জিনিস আটকায়। এছাড়া খাদ্যনালির চারটি সংকুচিত স্থানে যেকোনো কিছু আটকাতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন: সাধারণত রোগী নিজে বা রোগীর লোকজন কোনো কিছু খেয়ে ফেলার অথবা গলায় আটকে যাওয়ার কথা বলতে পারেন। তবে শিশুরা সেটা না-ও বুঝিয়ে বলতে পারে। ঢোক গিলতে অসুবিধা হতে পারে। গলা ব্যথা হতে পারে। অতিরিক্ত লালা বের হওয়া, বমি বমি ভাব হতে পারে। রোগের লক্ষণগুলো থেকে বোঝা না গেলে গলার বা বুকের এক্স-রে  করে ফরেন বডি বা বাহ্যিক বস্তু দেখা যাবে। ইসোফ্যাগোস্কপির (এন্ডোসকপি) মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়।

চিকিৎসা কী: এটি একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি অবস্থা। সুতরাং রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। এরপর সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে ইসোফ্যাগোস্কপির (এন্ডোসকপি) মাধ্যমে খাদ্যনালিতে আটকানো জিনিস বের করতে হবে। চিকিৎসা না করলে বিপদ হতে পারে। যেমন ১. খাদ্যনালিতে সংক্রমণ হতে পারে, ২. খাদ্যনালি ফুটো হয়ে ফুসফুসে সংক্রমণ অথবা পুঁজ জমতে পারে। যদি ধারালো কিছু হয়, রোগী মারাও যেতে পারে।

 

অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী

বিভাগীয় প্রধান, নাক কান গলা বিভাগ

আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ধানমন্ডি

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.