গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ফলে যে কোন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা অনেক বেড়ে যায়। শুধু তাই নয় গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের যে পরিবর্তন হয় তাতেও গর্ভবতী নারীরা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।সকল প্রকার চিকিৎসাপদ্ধতি এ সময়ে প্রয়োগ করা যায়না বলে রোগের তিব্রতা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়।

ডেঙ্গু রোগ গর্ভাবস্থায় ভয়াবহ কেন?

⚡ডেঙ্গু জ্বরের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রচন্ড বমি, যা Hyperemesis gravidarum (গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি) এর সাথে ধন্দ তৈরী করতে পারে যাতে রোগ নির্ণয় বিলম্বিত হতে পারে

⚡ গর্ভাবস্থায় কিছু শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের ফলে Hemodilution হয়ে ডেঙ্গুর অনুষঙ্গী Platelet count কমে যাওয়া বা HCT বেড়ে যাওয়াকে প্রচ্ছন্ন করে রেখে ডেঙ্গু নির্ণয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। ফলে দেরীতে রোগ শনাক্ত হয়ে রোগী মারা যেতে পারে।

⚡ গর্ভাবস্তায় রোগের ক্লিনিক্যাল রূপ পরিবর্তিত হওয়ায় রোগীদের হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।

⚡ ডেঙ্গুতে Platelet কমে যাওয়ার পাশাপাশি লিভার এনযাইম (ALT) বেড়ে যায়, যা গর্ভাবস্থার ভয়াবহ জটিলতার মধ্যে অন্যতম HELLP (Hemolysis Elevated liver enzymes low platelet) syndrome এও হয়। দুটি রোগের এই overlapping বৈশিষ্ট্য ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। তাই রোগ নির্ণয় করা জটিল হয়ে পড়ে।

কি করা উচিৎঃ

⚡গর্ভাবস্থায় জ্বর মানেই সংকটপূর্ণ অবস্থা, তাই জ্বরের মাত্রা যাই হোক না কেন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ডেঙ্গু কি মা থেকে গর্ভস্থ শিশুতে যেতে পারে?

অল্প কিছু গবেষনা হয়েছে যেখানে Cord blood ও মায়ের বুকের দুধে এ ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা গেছে। এ ভাইরাস প্লাসেন্টা ক্রস করতে পারে। প্রসবকালীন সময়েও বাচ্চা মা থেকে আক্রান্ত হতে পারে। শুধু তাই নয় বুকের দুধের মাধ্যমেও ছড়ানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না।

তাই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মায়ের সন্তান হওয়ার সাথে সাথে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষনে রাখুন।

 

ডাঃ নুসরাত সুলতানা লিমা

সহযোগী অধ্যাপক, ভাইরোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.