নারীদের, বিশেষ করে যারা ঘরের কাজ করেন, তাদের হাত প্রায়ই একজিমায় আক্রান্ত হয়। যারা খুব পানি ঘাঁটেন, অনবরত সাবান বা সোডাজাতীয় জিনিসের সংস্পর্শে আসেন, সাধারণত তাদের এ রোগ বেশি দেখা যায়।

শুরুতে আঙুলগুলো লাল ও শুকনা হয়ে ফেটে যায়, হাতের চামড়ায় ফোসকা পড়ে। অনেক সময় ত্বক ফেটে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। আঙুলে আংটি থাকলে এর চারপাশে একজিমা প্রকট হয়ে ওঠে। কারণ, আংটি বরাবর একই স্থানে থাকে বলে পানি ও সাবান এর তলায় জমে যায়।

শুধু গৃহবধূ বা গৃহকর্মী নন, যেসব পেশায় অনেকক্ষণ পানি ঘাঁটতে বা সাবান দিয়ে বারবার হাত ধুতে হয়, সেসব পেশার ব্যক্তিরাও এ রোগের শিকার হন। যেমন চিকিৎসক, রেস্তোরাঁর কর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মাছ ও সবজি বিক্রেতা। এছাড়া শাকসবজিজাতীয় জিনিস যেমনÑআদা, পেঁয়াজ, টমেটো, গাজর, ডুমুর, কুমড়া, বেগুন, পেঁপে ইত্যাদির অ্যালার্জি থেকেও হাতে একজিমা হতে পারে।

খাবারে প্রোটিনজাতীয় অংশ প্রায়ই অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। এর মধ্যে আছে আলু, গম, মাছ, বিশেষ করে খোলযুক্ত চিংড়ি, কাঁকড়া ইত্যাদি। এছাড়া গ্লাভসসহ প্লাস্টিকের পণ্য ও নিকেলজাতীয় ধাতবের সংস্পর্শে, ফাইলোডেনড্রেন, পার্থোনিয়াম ইত্যাদি গাছ বা প্যারাফিনাইল ডাই-অ্যামাইন রং (চুলের কলপে ব্যবহƒত হয়) থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। পটাশিয়াম ডাইক্রোমেট রাসায়নিক থেকেও অ্যালার্জি দেখা দেয়।

করণীয়: বারবার হাতের ত্বকে, আঙুলে লাল ফুসকুড়ি, ফাটা ও চুলকানি দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসক হাত দেখে অথবা কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ শনাক্ত করতে পারেন। এ জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া সবচেয়ে ভালো। এটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ।

এ রোগ প্রতিরোধে বারবার হাতে পানি লাগানো বা হাত ভেজানো থেকে বিরত থাকতে হবে। দরকার হলে বাসনকোসন ধোয়া বা কাপড় ধোয়ার সময় কিচেন গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। পানির কাজ করার পরপর নরম কাপড়ে হাত মুছে নিয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।

 

ডা. দিদারুল আহসান

চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগবিশেষজ্ঞ

সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক

আল-রাজী হাসপাতাল, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.