হাঁটুতে বিভিন্ন কারণে ব্যথা হতে পারে। বাতজ্বর, টিবি রোগ, এমনকি বৃদ্ধ বয়সে অস্টিওআর্থ্রাইটিস নামক অস্থির প্রদাহে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া আঘাতের কারণে হতে পারে ব্যথা।

ব্যথা সহনীয় হলে চুপচাপ বসে না থেকে ধীরে ধীরে হাঁটু নাড়াচাড়া করুন। তবে আঘাতের কারণে ব্যথা হলে বা জয়েন্ট ফুলে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রাম নিতে হবে। প্রতিদিন কিছু না কিছু ব্যায়াম করুন। তাই বলে দৌড়ঝাঁপ করতে যাবেন না। শুরুতে হাঁটা দিয়ে শুরু করুন। সাইক্লিং, সাঁতার কাটাও কিন্তু হাঁটুব্যথায় বেশ উপকারী। হাঁটুব্যথা কমাতে হাঁটুর মাংসপেশি শক্ত করার কাজটি বেশ উপকারী। এটি করা যায় ব্যায়ামের মাধ্যমে। গোড়ালির নিচে দুটি বালিশ দিয়ে একটু উঁচু করুন। এবার হাঁটু ভাঁজ না করে আস্তে আস্তে গোড়ালি দিয়ে বালিশের ওপর চাপ দিন। এভাবে দিনে তিনবার করতে পারেন ১০ মিনিট করে। দৌড় ও লাফ-ঝাঁপ করলে হাঁটুর ব্যথা বাড়বে। তাই এগুলো বাদ দিন। হাঁটুর আর্থ্রাইটিস সাধারণত একটু বেশি বয়সেই হয়ে থাকে। বয়সের কারণে অনেকেই পড়ে আঘাত পান। পড়ে গেলে হাঁটু আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এতে করে ব্যথা আরও বাড়তে পারে। তাই পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পেতে হলে চলতে হবে সাবধানে। প্রয়োজনে হাঁটাচলার সময় লাঠির সহায়তা নিতে পারেন। অনেকে লাঠি দিয়ে চলাফেরা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। তাদের বলছি, লজ্জার চেয়ে সুস্থ থাকাটা বেশি জরুরি। প্রদাহের কারণে হাঁটু ফুলে গেলে এবং ব্যথা বোধ করলে ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করুন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে দেখতে হবে রোগের কী কারণ।

অতিরিক্ত ওজন হাঁটুর ব্যথার জন্য দায়ী। কারণ অতিরিক্ত ওজন বহনের জন্য হাঁটুর ওপর চাপ পড়ে। এতে হাঁটুর হাড়ের তরুণাস্থিতে ক্ষয় দেখা দেয়। প্রয়োজনে ডায়েটিশিয়ানের সহায়তা নিন।

জুতার সোল কুশনযুক্ত হলে হাঁটুর ওপর চাপ কম পড়ে। বাজারে মেডিকেটেড সোলের এমন জুতা পাওয়া যায়। হাঁটুতে আঘাত পেলে বরফ-গরম পানির থেরাপি নিতে পারেন। বরফ পলিথিনে বা কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে হাঁটুতে দিন। এভাবে ১৫-২০ মিনিট করে দিনে তিন-চারবার। এরপর গরম পানির ভাঁপ নিন ১৫-২০ মিনিট ধরে দিনে তিন-চারবার। এ সময় ব্যায়াম করবেন না। পারলে পুরোপুরি বিশ্রাম নিন। ব্যান্ডেজ হাঁটুতে পেঁচিয়ে দিন। ঘুমানোর সময় ব্যান্ডেজ খুলে পা একটু উঁচু করে রাখুন।

 

অধ্যাপক সোহেলী রহমান

ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.