লবঙ্গ শরীরের জন্য কতটা আশ্চর্যজনক কাজ করে, তা হয়তো অনেকে জানেন না। প্রতিদিন দুটি করে লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে ১৩০টির বেশি বিভিন্ন উপকার পাবেন। এটি দাঁতের ব্যথা উপশমের বহুল ব্যবহৃত উপায়গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

লবঙ্গে বেশ কিছু 
» শক্তিশালী অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে
» আছে অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য
» অ্যান্টিফাংগাল ও অ্যান্টিক্যান্ডিডা বৈশিষ্ট্য আছে এতে
» আছে অ্যান্টিপ্যারাসাইটিক বৈশিষ্ট্য

যেসব উপকার পাওয়া যাবে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ 
রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে লবঙ্গের নাইজেরিসিন নামে উপাদানটি দারুণ কাজ করে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা এই রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য লবঙ্গ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

সাইনাস 
সাইনাসের মাথাব্যথায় এর তেল খুব কাজে দেয়। এ ছাড়া বুকের ব্যথায় এর তেল মালিশে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

দাঁত ও মাড়ির ব্যথায় 
লবঙ্গ দাঁতের ব্যথা দূর করে এবং মাড়ির ক্ষয় নিরাময় করে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি গুণের জন্য দাঁতের ব্যথা দূর করতে এটি খুব উপকারী। দাঁত ও মুখগহ্বর সুস্থ রাখতে নিয়মিত লবঙ্গপানির কুলকুচা করতে পারেন।

আলসার 
অনেক কারণে পাকস্থলীতে আলসারের সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা থাকলে প্রতিদিন দুটি করে লবঙ্গ খেতে পারেন। এটি পাকস্থলীতে মিউকাস উৎপাদনে সাহায্য করে। মিউকাস সংক্রমণের হাত থেকে পাকস্থলীকে ঢাল হিসেবে সুরক্ষিত রাখবে।

সর্দি-কাশি ও ঠান্ডা লাগা কমায় 
সর্দি-কাশির মহৌষধ হিসেবে লবঙ্গ কাজ করে। এটি চিবিয়ে রস গিলে খেলে বা মুখে রেখে চুষলে সর্দি, কফ, ঠান্ডা লাগা, অ্যাজমা, গলা ফুলে ওঠা, রক্তপিত্ত আর শ্বাসকষ্টে সুফল পাওয়া যায়।

মানসিক চাপ কমায় 
দুটি লবঙ্গ মুখে নিয়ে চুষতে থাকলে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যেতে পারে। মানসিক চাপ কমাতে এর চা খুব ভালো কাজে দেয়।

হজমে সহায়তা 
হজমে সহায়তা করে এমন এনজাইম নিঃসারণের মাধ্যমে এবং অ্যাসিড ক্ষরণের মাধ্যমে লবঙ্গ হজমক্ষমতা সক্রিয় করে তোলে। এটি শরীরে রক্তপ্রবাহ ঠিক রাখে।

শ্বাসকষ্ট কমায় 
লবঙ্গ চিবিয়ে রস গিলে খেলে শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানিতে আরাম পাওয়া যায়। এটি পানিতে ফুটিয়ে বাষ্প নিলেও শ্বাসকষ্ট কমে যায়।

ক্যানসার প্রতিরোধ করে
প্রতিদিন লবঙ্গ খেলে ক্যানসারের টিস্যুগুলো বাড়তে পারে না। এটি স্তন ক্যানসার ও ওভারিয়ান ক্যানসার থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন দুটি লবঙ্গ খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। এতে অনেক জটিল সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা সহজ হবে।

সতর্কতা
তবে উপকারিতা পেতে বেশি পরিমাণে লবঙ্গ খাওয়া উচিত নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, অকারণে লবঙ্গ অনেকে মুখে পুরে রাখেন, যা শরীরে উপকারের চেয়ে অপকারই ডেকে আনবে। যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কম, তাদের কখনোই বেশি পরিমাণে লবঙ্গ খেতে নেই।

বেশি খেলে তাদের হাইপারগ্লাইসিমিয়া হতে পারে। অনেক চিকিৎসক মনে করেন, যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে লবঙ্গ সেবনে র‌্যাশ বা চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে লবঙ্গ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

 

লেখক:

আলমগীর আলম

খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.