দেশে জরায়ুমুখের ক্যানসারের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। নারীদের যত ধরনের ক্যানসার হয়, তার মধ্যে তৃতীয় জরায়ুমুখের ক্যানসার। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এই ক্যানসারের প্রকোপ ৮০ শতাংশ।
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস নামক একটি ভাইরাস মূলত এই ক্যানসারের প্রধান কারণ। ভাইরাসটি সাধারণত যৌনবাহিত। যৌন মিলনের ফলেই নারীর শরীরে তা প্রবেশ করে।
লক্ষণ
যৌন মিলনের পর যোনিপথে রক্তপাত।অনিয়মিত মাসিক, অতিরিক্ত রক্তপাত বা ২ মাসিকের মধ্যে রক্তপাত।অতিরিক্ত সাদা স্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব বা পানির মতো স্রাব অথবা কোনো সময় রক্ত মিশ্রিত স্রাব যাওয়া।মেনোপজের পর আবার রক্তপাত, তলপেটে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, হাড়ে ব্যথা, কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত যাওয়া ইত্যাদি ।
প্রতিরোধ ব্যবস্থা :
কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে না দেওয়া।অধিক সন্তান ধারণা করা।যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।একাধিক যৌনসঙ্গী না রাখা।নয় থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীদের জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধক টিকা গ্রহণ করা।৩০ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত নারীদের প্রতি ৩ বছর পরপর ভায়া টেস্ট করা। ওপরের লক্ষণগুলোর কোনো একটি হতে থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা। জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হলো টিকা। এতে ৮৫ শতাংশ ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায়। নিয়মিত জরায়ুমুখ পরীক্ষা করে সহজেই ক্যানসার থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
টিকা কারা দিতে পারবেন : টিকা দেওয়ার উপযুক্ত সময় হলো ৯-২৬ বছর বয়স। বিবাহিত জীবন শুরু করার পূর্বে টিকা অত্যন্ত কার্যকর। এ ছাড়া ৪৫ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ যারা বিবাহিত, তারাও দিতে পারবেন। দেশে জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা সহজলভ্য।
ডোজ
৯-১৪ বছর : দুটি ডোজ। প্রথমটি নেওয়ার ছয় মাস পর আরেকটি নিতে হবে।
১৫-৪৫ বছর : তিনটি ডোজ। প্রথম টিকা নেওয়ার এক মাস ও ছয় মাস পর বাকি দুটি টিকা নিতে হবে।
নির্ধারিত ডোজ মিস হলে দ্বিতীয় ডোজ প্রথম ডোজের ১২ মাসের মধ্যে দিলে ভালো।
ডা. মো. ইয়াকুব আলী
বিভাগীয় প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অফ মেডিকেল অনকোলজি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
এমবিবিএস, এফসিপিএস (রেডিওথেরাপি), এফআরএসএইচ (লন্ডন), এইএইএ ফেলোশিপ (রেডিওথেরাপি)