একদিন সকালে ঘুম থেকে জেগে ঢুলতে ঢুলতে হয়তো গেলেন আয়নার সামনে। হঠাৎ দেখলেন আপনার চোখ দুটো অস্বাভাবিক লাল হয়ে আছে। সঙ্গে অঝোর ধারায় পানি ঝরছে। আর খানিক পরপর চুলকানিও হচ্ছে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ভাবলেন, হয়তো চোখে পানির ঝাপটা দিলেই সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু কোনো পরিবর্তন তো হলোই না, উল্টো শুরু হলো চোখে জ্বলুনি।

চোখে লালচে হয়ে যাওয়ার কারণ 
বাহ্যিক নানা কারণে চোখ লাল হয়ে যেতে পারে। যেমন: ধুলোবালি, ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে প্রাচীরে বাস করা অণুজীব, পোষা প্রাণীর শরীরে বসবাসকারী পরজীবী, ফুলের রেণু, সুইমিং পুলে ব্যবহার্য ক্লোরিন, সুগন্ধী, সিগারেটের ধোঁয়া ইত্যাদি। সংবেদনশীলতা উদ্রেককারী উপাদান চোখের সংস্পর্শে এলেই চোখে হিস্টামিন জাতীয় পদার্থ নিঃসৃত হয়। চোখের আণুবীক্ষণিক শিরা-উপশিরা এই হিস্টামিন দ্বারা স্ফীত এবং প্রসারিত হয়ে চোখের স্থায়ী লালচে ভাব তৈরি করে। বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার কারণে চোখ লাল হতে পারে। যেমন:

শুষ্ক চোখ
শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় চোখে পানির স্তর শুকিয়ে আসে এবং শুষ্কতা দেখা দেয়। ফলে চোখ থেকে ঘন ঘন পানি ঝরতে দেখা যায়।

গ্লুকোমা
চোখের অভ্যন্তরীণ প্রেশার কোনো কারণে বেড়ে গেলে চোখের অপ্টিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে টানেল ভিশন, চোখে তীব্র ব্যথা, এমনকি স্থায়ী দৃষ্টিহীনতা দেখা দেয়।

ইউভাইটিস 
এতে সাধারণত ২০-৬০ বছর বয়সী মানুষেরা আক্রান্ত হন। এ ক্ষেত্রে চোখের মধ্যবর্তী স্তর, ইউভিয়া ও তার চারপাশের টিস্যুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এ ছাড়া আরও কিছু জটিলতার কারণে চোখ লাল হতে পারে। যেমন: 
১. আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে।
২. দীর্ঘ সময় কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করলে।
৩. গর্ভাবস্থায় ও মেনোপজকালীন সময়ে শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে।
৪. অপর্যাপ্ত ঘুম হলে।

কখন চোখের ইনফেকশন হয় 
১. চোখের পাতার গোড়ায় খুশকি দেখা দিলে।
২. চোখের পাতায় অঞ্জনী ও ক্যালাজিয়ন তৈরি হলে।
৩.ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ফাঙ্গাসের আক্রমণে কংজাইটিভাইটিস দেখা দিলেও চোখের ইনফেকশন হয়।

 

লেখক:

ডা. নুসরাত সুলতানা শিমু 

চিকিৎসক, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা। 

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.