খোসপাঁচড়া বা স্ক্যাবিস অত্যন্ত ছোঁয়াচে একটি চর্মরোগ। এটি এক ধরনের কীটের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এ কীট ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় বেশি দিন বেঁচে থাকতে পারে বলে গ্রীষ্মের তুলনায় শীত মৌসুমে খোসপাঁচড়ার প্রকোপ বেশি দেখা যায়।

খোসপাঁচড়ার প্রাথমিক ও অতিপরিচিত লক্ষণ হচ্ছে চুলকানি। বিশেষ করে রাতে চুলকানি বেড়ে যায়। এ ছাড়া লাল ক্ষুদ্র ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। হাত-পায়ের আঙুলের মাঝখানে, চামড়া, ঊরু বা যৌনাঙ্গের ত্বকের ভাঁজে, কবজি বা হাঁটুর বাঁকানো স্থানে, কোমর বা স্তনের চারপাশে এসব ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।

কাদের বেশি হয়: মূলত যারা ঘনবসতি ও জনাকীর্ণ জায়গায় বাস করেন, তাদের খোসপাঁচড়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। এ ক্ষেত্রে শিশুরা আক্রান্ত হয় বেশি। এ ছাড়া স্কুল-মাদ্রাসার ছাত্রাবাস ও এতিমখানায় অবস্থান করা শিশুদেরও খোসপাঁচড়া বেশি দেখা যায়।

করণীয়: খোসপাঁচড়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে পারমিথ্রিন ক্রিম বা বেনজাইল বেনজোয়েট লোশন ইত্যাদি সঠিক নিয়মে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে এ চিকিৎসা যেন পরিবারের সবাই একসঙ্গে পেয়ে থাকেন।

খোসপাঁচড়া ছোঁয়াচে রোগ হওয়ায় এর বিস্তাররোধে কমপক্ষে ৩০ মিনিট গরম পানিতে বাসার চাদর, তোয়ালে ও কাপড় পরিষ্কার করতে হবে। জামাকাপড় ও নিয়মিত ব্যবহƒত জিনিসপত্র প্রতিদিন সাবান দিয়ে ধুতে হবে।

শিশুদের যেসব খেলনা পানি দিয়ে ধোয়া সম্ভব নয়, সেগুলো এক সপ্তাহের জন্য প্লাস্টিকের ব্যাগে ঢুকিয়ে ভালোভাবে মুখ আটকে রাখা যেতে পারে।

সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির মধ্যে খোসপাঁচড়া দেখা দিলে অন্যদেরও এ বিষয়ে সজাগ থাকা জরুরি।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন:

ক. খোসপাঁচড়ার চিকিৎসা করা হয়েছে কিন্তু এক মাস পরও এর উপসর্গ বা ত্বকের সমস্যার সমাধান না হলে;

খ. শরীরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে, যেমন পুঁজের সঙ্গে লালচে ভাব বা ঘা হলে;

গ. খোসপাঁচড়ার চিকিৎসায় দেয়া নির্ধারিত ওষুধগুলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করলে।

 

ডা. কামরুজ্জামান নাবিল

বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.