মস্তিস্কে রোগের কারনে ব্যাপক আচরনগত পরিবর্তণ হয় এই রোগে। আমাদের মস্তিষ্ক বা ব্রেনে চারটা লোব থাকে। কপালের কাছে ফ্রন্টাল লোব, মাথার তালুর কাছে প্যারাইটাল লোব, পিছনে অক্সিপিটাল লোব এবং কানের নীচে টেম্পোরাল লোব। বিভিন্ন লোবের কাজও ভিন্ন ভিন্ন। এক এক লোবের সমস্যা হলে এক এক ধরনের সমস্যা কিন্তু দেখা দেয়। ক্লিভার বুসি সিনড্রমে আমাদের টেম্পোরাল লোবের সমস্যার কারনে হয়। ক্লিভার এবং বুসি নামের দুইজন বিজ্ঞানী ১৯৩৯ সালে এই রোগের বর্ণনা দেন।

টেম্পোরাল লোবে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ থাকে। একটির নাম হিপোক্যাম্পাস আরেকটা নাম হচ্ছে এমাগডালা। এসব অংশের সমস্যা হলে এই সিনড্রোম দেখা যায়। এই সিন্ড্রমে দুই দিকের টেম্পোরাল লোব নষ্ট হয়ে যায়।

টেম্পোরাল লোবে যদি কোন আঘাত লাগে, যদি কোন টিউমার হয়, ব্রেইনে বয়সের কারনে ক্ষমতা লোপ পায় এবং কোন ইনফেকশন হয় অথবা স্ট্রোক হয় তখন এই সিনড্রোম হতে পারে। হারপেস ভাইরাসের সংক্রমনে এটা বেশী হয়। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে ব্রেনে প্রদাহ বা এনকেফালাইটিস হয়। এরপরে দেখা যায় সেই ব্যক্তির এই সিনড্রোম হয়েছে ।

এই সিনড্রমে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায়। রুগীর যৌন ইচ্ছা চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এছাড়া রোগীর ক্ষুধা বেড়ে যায় এবং রোগী চোখে দেখে কোন জিনিস চিনতে অনেক সময় অসুবিধা হয়।
সবার একই উপসর্গ হবে তা না। একেকজনের ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলি কম বেশী হতে পারে।

ক্লিভার বুসি সিনড্রমের তেমন কোন ভাল চিকিৎসা নেই। তবে যেসব সমস্যা বা যেসব লক্ষণ দেখা দেয় সেসব লক্ষণ এর চিকিৎসা করা হয়। আশার কথা এই রোগ কিন্তু খুব বিপদজনক না। তাই ব্রেনে যদি কোন ইনফেকশন হয় বা কোন আঘাত লাগলে তাহলে এরকমটা হতে পারে জেনে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।

 

ডা. মোঃ ফজলুল কবির পাভেল

এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য), এমপিএইচ, সিসিডি (বারডেম), এমডি (থিসিস)-নিউরোমেডিসিন,এফসিপিএস (ফাইনাল পার্ট)
নিউরোমেডিসিন বিভাগ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.