ডিমকে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একটি সিদ্ধ ডিমে রয়েছে ৭৮ ক্যালরি, ৬ দশমিক ৩ গ্রাম প্রোটিন, ৫ দশমিক ৩৪ গ্রাম ফ্যাট ও সামান্য কার্বোহাইড্রেট। এ ছাড়া রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, আয়োডিন, সেলেনিয়াম, ফসফোরিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন বি৫, ভিটামিন ডি, জিংক, ফোলেট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কোলিন, লুটেইন ও জেক্সানথিন।
ডিম খাওয়ার নিয়ম: কেউ যদি ক্যালরি, ওজন বা কোলেস্টেরল কমানোর কথা চিন্তা করেন, অথবা ফ্যাটি লিভারের কথা ভাবেন, তাহলে তারা ডিম সিদ্ধ বা পানিতে পোচ করে খাবেন। কারণ এখানে কোনো তেল থাকবে না। ডিমের পুষ্টি সর্বাধিক পেতে যতটা সম্ভব কম তাপমাত্রায় স্বল্প সময়ে রান্না করুন। প্রচলিত ডিমের চেয়ে অরগানিক ডিম বেশি পুষ্টিকর। দেশি প্রাকৃতিকভাবে চারণ করা মুরগির ডিমে ভিটামিন এ, ই, ওমেগা থ্রি ও ভিটামিন ডি প্রচলিত ডিমের চেয়ে তিনগুণ বেশি। এ ছাড়া ওমেগা থ্রি-যুক্ত ডিমে উপকারী চর্বি বেশি। তাই হƒদরোগ, কোলেস্টরল ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এই ডিম ভালো। ডিম রান্নার ক্ষেত্রে ভালো তেল নির্বাচন করা উত্তম। যেমন অ্যাভোকাডো ও এক্সট্রা ভার্জিন জলপাই তেল। ডিমে কোনো ফাইবার থাকে না। ডিমের সঙ্গে ফাইবার তথা আঁশ হিসেবে খেতে পারেন পালংশাক, বাঁধাকপি, ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, পেঁয়াজ, মরিচ প্রভৃতি। ডিম চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন হওয়ায় একে সামান্য তেল দিয়ে খেলে সহজে শরীরে শোষিত হবে। তবে অবশ্যই বেশি তেল দিয়ে দীর্ঘ সময় ভাজবেন না।
লক্ষণীয়: ডিম কাঁচা বা অল্প পোচ করে খাবেন না। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশুরা। এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। কোলেস্টেরল বেশি না থাকলে বা হƒদরোগের ঝুঁকি না থাকলে ডিম অল্প তেল যোগ করে খেতে পারেন। কারণ ডিম সিদ্ধ থেকে ডিম ভেজে খেলে প্রায় প্রতিটি ভিটামিন বেশি পাওয়া যায়। বিশেষ করে শিশুদের এভাবে দিন। ডিমের মধ্যে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান ভালো থাকায় ডিম খাওয়ার পর চা, চিনিযুক্ত খাবার, দুধ বা সয়াজাতীয় খাবার খাবেন না। ডিম যেহেতু প্রোটিনের ভালো উৎস, তাই প্রোটিনের চাহিদা ও অন্য প্রোটিনজাতীয় খাবার কেমন খাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে ডিম খেতে হবে। ডিম ধরার পর অবশ্যই হাত সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নেবেন।
লিনা আকতার
পুষ্টিবিদ
রাইয়ান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর