গরমে অনেক জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই এ সময় ডাবের পানি, কলা, স্যালাইন, আখের গুড়ের শরবত, লেবুর শরবত, তেঁতুলের পাতলা পানি, কাঁচা আমের শরবত বেশি খেতে হবে।
স্টার্চ ও জটিল শর্করা: গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে পানিজাতীয় খাবারের পাশাপাশি যেসব খাবার দেহে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে, সেসবের পরিমাণ বাড়াতে হবে। যেমনÑজটিল শর্করা ও স্টার্চÑ ওটস, লাল চিড়া। এগুলো দীর্ঘক্ষণ দেহকে ঠাণ্ডা রাখে। এছাড়া ইসবগুল, চিয়া সিড, তোকমা দানা, বার্লি এগুলোর ওজনের তিন গুণ পানি শোষণ করে দেহ ঠাণ্ডা রাখে।
পানসে সবজি: যেসব সবজিতে পানি বেশি, যেমন লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, পটোল, চিচিঙ্গা, শসা, টমেটো, ধুন্দল বেশি খেতে হবে।
পানসে ফল: তরমুজ, নাশপাতি, ডালিম, আপেল, পাকা পেঁপে, ঘরে তৈরি আখের রস, আঙুর, আনারস, কমলা, মাল্টা, স্ট্রবেরি বেশি খেতে হবে। গরমে যখনই ফলের রস খাবেন, সঙ্গে এক টেবিল চামচ তোকমা বা ইসবগুল মিশিয়ে খান; দেহ অনেকক্ষণ ঠাণ্ডা থাকবে।
প্রোবায়োটিক: গরমে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকে রাস্তার পাশে বিভিন্ন পানীয় পান করেন। এতে বিভিন্ন হজমজনিত সমস্যা ও পানিবাহিত রোগ, যেমন টাইফয়েড, হেপাটাইটিস, ডায়রিয়া, আমাশয়, বদহজম প্রভৃতি বেড়ে যায়। তাই প্রোবায়োটিক (উপকারী ব্যাকটেরিয়া) সমৃদ্ধ খাবার, যেমন টক দই, মাঠা, আপেল, ইসবগুল বেশি খেতে হবে। ডাবের পানি, কাঁচা কলা, পেঁপে, চিয়া সিড, আদা, হলুদ চা, জিরাপানি, তুলসী চা, বার্লি, ওটস, মধু ও লাল খাবারও ভালো কাজ করে। ঝিঙে, চিচিঙ্গা, করলা, ধুন্দল, শসা, পটোল প্রভৃতি সবজিও পেটের সমস্যায় বেশ উপকারী।
ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ টক ফল: গরমে অতিরিক্ত ঘেমে অনেকে ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, গলাব্যথায় আক্রান্ত হন। এ সময় ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ টক ফল ও সবজি, যেমন কমলা, মাল্টা, আনারস, পেয়ারা, ক্যাপসিকাম বেশ ভালো কাজে দেয়। এছাড়া গরম স্যুপ, গ্রিন টি, তুলসী চা, আদা চা বা যেকোনো হারবাল চা সর্দি, কাশি, গলাব্যথা নিরাময়ে বেশ কার্যকর। গরম পানিতে হালকা মধু, আদা, পুদিনা, দারুচিনি, লবঙ্গ ইত্যাদি মসলা দিয়ে খেলেও ভালো ফল পাবেন।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল খাবার: গরমে প্রস্রাবের সংক্রমণ খুব হয়। এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল খাবার, যেমন দারুচিনি, রসুন, মধু খুব ভালো কাজ করে। পুদিনা ও আদা দেহ ঠাণ্ডা রাখে। তাই এগুলো খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। এ গরমে অতিরিক্ত মসলা, তেল, ভাজাপোড়া, টেস্টিং সল্ট দেয়া খাবার, রাস্তার খোলা খাবার অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে।
ফাহমিদা হাশেম
জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড ও ফিটব্যাক রিসেট