ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি- এমন একটি রোগ যা ফুসফুসে স্বাভাবিক বায়ুপ্রবাহে বাধা দিয়ে শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করে। এটি এমফিসেমা ও দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিসও তৈরি করে।
সিওপিডি-এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ধূমপান ও বায়ু দূষণ। যদিও সিওপিডি-এর মূল কারণ হিসেবে ধূমপানকে ধরা হয়। তবে গবেষণায় দেখা যায় সিওপিডি আক্রান্ত প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জন কখনও ধূমপান করেননি।
সিওপিডি-এর সাধারণ উপসর্গগুলো হলো শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা, কফসহ দীর্ঘস্থায়ী কাশি, এবং অবসাদ বোধ করা। এই লক্ষণগুলো হঠাৎ করে দ্রুত খারাপ হতে পারে। তখন এগুলোকে বলা হয় একিউট এক্সারবেশন। ইনফেকশানের কারণে মূলত এই অবস্থা হয়। এগুলো সাধারণত কয়েকদিন স্থায়ী হয় এবং প্রায়শই অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয়।
সিওপিডি আক্রান্ত ব্যক্তিরা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যায় উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে ফুসফুসের সংক্রমণ, যেমন ফ্লু বা নিউমোনিয়া, ফুসফুসের ক্যান্সার, হার্টেরসমস্যা, দুর্বল পেশী ও ভঙ্গুর হাড়, বিষণ্নতা এবং উদ্বেগ।
সিওপিডি নির্ণয়ে স্পাইরোমেট্রি অথবা ব্রঙ্কোডাইলেটরসহ স্পাইরোমেট্রি দ্বারা রোগ নির্ণয় করা হয়।
সিওপিডি-এর চিকিৎসায় মূল পদক্ষেপগুলো হলো- ধুমপান ত্যাগ করা। সিওপিডি চিকিৎসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ধূমপান বন্ধ করা। এর জন্য প্রয়োজনীয় কাউন্সিলিং করতে হবে; বাড়িতে এবং কর্মক্ষেত্রে তামাকের ধোঁয়া এবং অন্যান্য বায়ু দূষণের মাত্রা কম রাখা ও এড়িয়ে চলা; পর্যাপ্ত ওষুধ। কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণগুলি ব্রঙ্কোডাইলেটর, স্টেরয়েড এবং অ্যান্টিবায়োটিকের মতো ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে; পালমোনারি রিহ্যাবিলিটেশন হল এক ধরনের চিকিৎসা প্রোগ্রাম যাতে ফার্মাকোলজিকাল চিকিৎসা, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, পুষ্টি সহায়তা, টিকা এবং দৈনন্দিন জীবনমান উন্নত করতে কাউন্সেলিং করা হয়ে থাকে; ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রতি বছর একবার ফ্লু শট এবং নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন দেয়া হয়ে থাকে; সম্পূরক অক্সিজেন। করপালমোনালী বা হার্ট ফেইলিউর হওয়ার আশংকা থাকলে অক্সিজেন প্রদানের জন্য একটি বহনযোগ্য অক্সিজেন ট্যাঙ্কের ব্যবস্থা বাসায় রাখতে হয়।
লেখক:
ডা. এসএম আবদুল্লাহ আল মামুন
এমবিবিএস(ডিএমসি), এমডি(চেস্ট), এমসিপিএস(মেড), এফআরসিপি(ইডিন)
সিনিয়র কনসালটেন্ট, রেসপিরেটরি মেডিসিন, এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা।