যখন-তখন, সামান্য চাপে প্রস্রাব ঝরে। হালকা নড়াচড়াতেও ঘটে এমনটি। এতে ভয়ে-সংকোচে অনেক নারী বাড়ির বাইরে যাওয়া, সামাজিক মেলামেশা, ভ্রমণ ইত্যাদি বন্ধ করে দেন। তারা সারাক্ষণ এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। এটি গর্ভধারণ-পরবর্তী নারীদের একটি পরিচিত সমস্যা, যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকট আকার ধারণ করে।

চিকিৎসাশাস্ত্রে এই রোগকে বলা হয় স্ট্রেস ইউরিনারি ইনকনটিনেন্স। রোগটি নারীদেরই বেশি হয়, ক্ষেত্রবিশেষ পুরুষেরাও ভুক্তভোগী।

উপসর্গ: হাঁচি-কাশির সঙ্গে প্রস্রাব ঝরা; শারীরিক বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির পরিবর্তন যেমন চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ানো বা শোয়া থেকে উঠে দাঁড়ানোর সময় প্রস্রাব ঝরা; জোরে হাসি দিলে বা নামাজের রুকু-সিজদায় (যেসব অবস্থায় পেটের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়ে) গেলে প্রস্রাব ঝরা।

কারণ: পেলভিক ফ্লোর তথা যে মাংসপেশির ওপর মূত্রথলি বসানো থাকে, সেই মাংসপেশির দুর্বলতার কারণে থলিটি নিচের দিকে এসে অথবা মূত্রথলির মুখে যে মাংসপেশি প্রস্রাব ধরে রাখে, তা শিথিল হয়ে গিয়ে এই রোগ হতে পারে। এই শিথিলতা গর্ভধারণ, নরমাল ডেলিভারি অথবা অনেকের শরীরের স্বভাবগত কারণে হয়ে থাকে।

প্রতিরোধ: মাংসপেশির শিথিলতা রোধে পেলভিক ফ্লোর মাসলের ব্যায়াম (কেগেলস এক্সারসাইজ) করতে হয়। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রায় ৬৭ শতাংশ রোগী এই ব্যায়ামের মাধ্যমে উপকার পান। বাকিদের ক্ষেত্রে সার্জিক্যাল চিকিৎসায় যেতে হয়।

চিকিৎসা: তিন-ছয় মাস ব্যায়ামের পর লক্ষণগুলো জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করার মতো থেকে গেলে সার্জারিতে যাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের সার্জারি করা যায়। এর মধ্যে সিøং সার্জারি অন্যতম। সিøং হিসেবে নিজের শরীরের টিস্যু বা সিনথেটিক সিøং ব্যবহার করা যায়। এটি সাধারণত ডে কেস সার্জারি হিসেবে করা যায়, এই সার্জারির সফলতা খুব ভালো। সাধারণত ইউরোলজিস্টরা এই রোগের চিকিৎসা করে থাকেন। তবে যারা ইউরোগাইনোকোলজিস্ট হিসেবে কাজ করেন, তারাও এর চিকিৎসা দিতে পারেন।

 

ডা. হাসিনা সাদিয়া খান

সহযোগী অধ্যাপক, ইউরোলজি বিভাগ

পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.