পরিবারকে খুশিতে ভাসিয়ে দেয় একটি শিশুর আগমন। কিন্তু আমরা অজান্তেই তার কিছু ক্ষতি করে ফেলি। একটু সতর্ক থাকলেই কিন্তু এগুলো এড়ানো যায়। আবার শিশুকে ভালো রাখতে প্রসূতির যত্নও গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, মা সুস্থ থাকলে শিশুও সুস্থ থাকবে।

নবজাতকের যত্নে যা করা দরকার:

  • নবজাতকের ঘরে অতিথিদের বেশি ভিড় করা উচিত নয়। অনেকের শ্বাসতন্ত্রের বা ত্বকের সংক্রমণ থেকে নবজাতক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। কেউ হাত না ধুয়ে বা স্যানিটাইজ না করে যেন নবজাতককে স্পর্শ না করেন। চুমু খাওয়াও ভালো নয়।

  • জন্মের পরপরই নবজাতককে বুকের দুধ পান শুরু করানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব, এমনকি গর্ভফুল প্রসব হওয়ার আগেই বাচ্চাকে মায়ের বুকে দিতে হবে। শিশুর জন্মের পর এক–দুই দিন বুকের দুধ ভালোভাবে আসে না। তখন ঘন হালকা হলুদ রঙের যে শালদুধ বের হয়, সেটি পুষ্টিগুণে ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতায় উচ্চমানের।
  • উষ্ণতার জন্য শিশুকে একটি মোটা তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে না রেখে কয়েক স্তরে নরম সুতি কাপড় দিয়ে প্যাঁচানো ভালো। কাপড় কিনে সরাসরি শিশুকে না পরিয়ে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে তারপর পরানো উচিত।
  • প্রসবের পরপরই চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত ধাত্রী বা নার্স শিশুর নাভিটি জীবাণুমুক্ত ব্লেড দিয়ে কাটবেন এবং দুটি জীবাণুমুক্ত ক্ল্যাম্প বা সুতা দিয়ে নাভি বাঁধবেন। এরপর নাভিতে একবার ঘন স্পিরিট লাগিয়ে দিতে হবে। বাসায় আনার পরে নাভিতে কোনো সেঁক দেওয়া যাবে না। নাভি শুকনা ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

বিপদ–চিহ্ন

যেসব লক্ষণ দেখলে নবজাতককে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে, সেগুলোই বিপদ–চিহ্ন। যেমন ১০০ ডিগ্রি বা এর বেশি জ্বর আসা অথবা শরীরের তাপমাত্রা ৯৭ ডিগ্রির নিচে নেমে ঠান্ডা হয়ে যাওয়া; শিশু বুকের দুধ টানতে না পারলে, খেতে আগ্রহী না হলে, ঘন ঘন শ্বাস নিলে, বুকের খাঁচা দেবে গেলে, নিস্তেজ হয়ে গেলে, বেশি নড়াচড়া না করলে বা খিঁচুনি হলে, জন্ডিস দেখা দিলে। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

 

অধ্যাপক ডা. শাহীন আক্তার

নবজাতক, শিশু, কিশোর বিভাগ আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.