নবজাতককে খাওয়ানোর পরপরই কিছুটা দুধ নাক-মুখ দিয়ে বের হতে পারে। এমন অভিজ্ঞতা নতুন মায়েদের কমবেশি হয়ে থাকে। কখনও কখনও শিশুর পেটের ব্যথায় পরিবারের সদস্যদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। আর সাধারণত এসবই হয় নবজাতকের পেটে গ্যাস বা বাতাস জমার কারণে। তাই তাদের গ্যাস বের করতে আলতোভাবে পিঠ চাপড়ে ঢেঁকুর তোলানো জরুরি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘বারপিং’ বলে।
ঢেঁকুর তোলানোর পদ্ধতি: শিশুকে এমনভাবে কোলে তুলে ঢেঁকুর তোলাতে হবে, যেন শিশু ও মা দুজনের জন্যই তা আরামদায়ক হয়। এ জন্য প্রয়োজনÑসোজা হয়ে বসে শিশুকে বুকের বিপরীতে এমনভাবে নিতে হবে, যেন শিশুর থুতনি মায়ের কাঁধের ওপর থাকে; এক হাত দিয়ে মা শিশুকে সাপোর্ট দেবেন এবং অন্য হাত কাপের মতো আকৃতি করে পিঠে আলতোভাবে চাপ দেবেন; শিশুকে কোলে বসিয়ে তার থুতনি ও বুক মা এক হাতে আলগে ধরে অন্য হাত দিয়ে পিঠে হালকা চাপ দেবেন। এভাবেও পাকস্থলীর বাতাস বের করা যেতে পারে; এরপরও যদি মনে হয় শিশুর পেটে গ্যাস জমে আছে, সে ক্ষেত্রে শিশুকে চিত করে শুইয়ে পেটে আলতো করে চাপ দিতে হবে এবং সাইকেলের প্যাডেল ঘোরানোর মতো করে শিশুর পা নড়াচড়া করানোর চেষ্টা করতে হবে; এর পরও যদি শিশুর গ্যাস না কমে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কখনও কখনও দুধের কিছু অংশও বের হতে পারে। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
গ্যাস জমার কারণ: শিশু দুধ খাওয়ার সময় কিছু বাতাস পেটে যেতে পারে; যা শিশুর জন্য খুবই অস্বস্তিকর। এ ক্ষেত্রে বুকের দুধ খাওয়া শিশুদের তুলনায় ফিডারে দুধ খাওয়া শিশুদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি; শুধু দুধের সঙ্গে বাতাস যাওয়ার জন্যই যে শিশুর পেটে গ্যাস জমে, এমনটি নয়। শিশুদের অপরিণত পরিপাকতন্ত্র খাদ্যের বিপাকক্রিয়ায় উপজাত হিসেবেও গ্যাস তৈরি করে থাকে।
গ্যাস আটকে যাওয়ার লক্ষণ: পেট ফোলা ও শক্ত লাগা। পেট ফেঁপে থাকা; পেটব্যথা বা ইনফ্যান্টাইল কোলিক; কান্নাকাটি করে লাল হয়ে যাওয়া; অস্থির ও খিটখিটে হয়ে যাওয়া; ব্যথায় পা কুঁচকে পেটের কাছে নিয়ে আসা।
ডা. ফারাহ দোলা
বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর