মৃগীরোগ হলো স্নায়বিক (কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের) ব্যাধি, যা মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের কার্যকলাপে ব্যাঘাতের ফলে খিঁচুনি এবং অল্প সময়ের জন্য অস্বাভাবিক আচরণ, সংবেদন এবং চেতনা হারানোর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। তাকেই মৃগী রোগ বলে। সুস্থ একজন মানুষ যদি হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে কাঁপুনি বা খিঁচুনির শিকার হয়, চোখ-মুখ উল্টিয়ে হাত-পা ছুড়ে কাতরায় বা অজ্ঞান হয়, মুখ দিয়ে ফেনা বা লালা বের হয় কিংবা কোনো শিশুর চোখের পাতা স্থির হয়ে যায়, একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকে অথবা মানসিকভাবে সুস্থ কোনো ব্যক্তি হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে, তবে তাকে মৃগীরোগী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
রোগ নির্ণয় : রোগীর ইতিহাস এবং সম্ভব হলে খিঁচুনির ভিডিও রোগ নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মস্তিষ্কের ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাম উপসর্গভিত্তিক রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করতে পারে। মস্তিষ্কের ইমেজিং-সিটি স্ক্যান বা এমআরআই এবং বিশেষ ক্ষেত্রে আরও কিছু পরীক্ষা লাগতে পারে। যেমন রক্তের ইলেকট্রোলাইট, শর্করা, মেরুদন্ডের রস ইত্যাদি।
চিকিৎসা : বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খিঁচুনির কারণ নির্মূল হলে এ রোগ ভালো হয়ে যায়। তবে চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি, এমনকি সারা জীবনও প্রয়োজন হতে পারে। একজন স্নায়ুরোগ (নিউরোলজি) মেডিসিন বিশেষজ্ঞের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে মৃগীরোগের চিকিৎসা করানো উচিত। কারণ, শিশুদের চিকিৎসা যথাসময়ে না হলে মেধা ও বুদ্ধিমত্তা হ্রাস পায়।
অধ্যাপক ডাঃ এম.এস জহিরুল হক চৌধুরী