শসা স্বাস্থ্যকর ও সহজলভ্য সবজি। এটি সারা বছর পাওয়া যায় এবং এর বহুমুখী উপকার রয়েছে। শসায় পানি থাকে প্রায় ৯৫ শতাংশ। এই পানি গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহ থেকে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে এবং শরীরের বিষাক্ত পদার্থগুলো দূর করতে সহায়তা করবে।

এই সবজির আছে আরও অনেক উপকারিতা:

● শসার মধ্যে ক্যালরি কম ও আঁশযুক্ত উপাদান থাকায় এটি ওজন কমাতে ও অন্ত্রের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।

● শসায় ভিটামিন কে, সি, এ ও ক্লোরোফিল রয়েছে; যা মূত্রথলির পাথর বের করতে সহায়তা করে। শসার রস শক্তিশালী মূত্রবর্ধক হিসেবে পরিচিত।

● শসার ভিটামিন বি ও ইলেকট্রোলাইট গরমে মাথাব্যথার তীব্রতা কমায়। এর সিলিকন ডাই-অক্সাইড সংযোজক টিস্যুগুলো শক্তিশালী করে। এ ছাড়া ভিটামিন এ, বি১, বি৬, ডি, কে, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা কমিয়ে সন্ধির ব্যথা থেকে মুক্তি দেয় ও হাড় শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

● শসার রস ডায়াবেটিক রোগীর জন্য সহায়ক।

● শসা পটাশিয়ামের ভালো উৎস, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। শসা ফ্ল্যাভোনয়েড–সমৃদ্ধ, যা প্রদাহ হ্রাস করতে সহায়তা করে।

● শসার বিটা ক্যারোটিন শরীরে ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।

● শসার ইরেপসিন নামের এনজাইম পেটের কৃমি মেরে ফেলতে পারে।

● শসায় থাকা লিগানন স্তন, জরায়ু ও প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। এর মধ্যে থাকা আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যেমন ল্যারিকিরসিনল, পিনোরসিনল, সেকোইসোলারিসাইরিনল সব ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে।

● শসার ফিসেটিন নামের ফ্ল্যাভোনয়েড আলঝেইমার রোগ বিলম্ব করতে সহায়তা করে।

● শসায় থাকা খনিজ মস্তিষ্কের সঠিক যোগাযোগের জন্য প্রয়োজনীয় নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সহায়তা করে।

● শসায় আছে সালফার, সিলিকন যৌগ; যা ত্বক ও চুলের বৃদ্ধির জন্য অনেক উপকারী।

এ ছাড়া শসার রস চোখের নিচে কুঁচকে ও কালো হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। শসা জিবের সঙ্গে চেপে রাখলে মুখের জীবাণু মেরে ফেলতে পারে।

সতর্কতা ও খাওয়ার নিয়ম

● শসাতে এমন একটি এনজাইম যৌগ রয়েছে; যা কারও কারও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জির কারণও হতে পারে। এসব ব্যক্তি শসা এড়িয়ে চলবেন।

● শসা কেনার সময় হলুদ বর্ণ এড়িয়ে চলবেন।

● শসা কাটার ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে খেয়ে ফেলতে হবে; না হলে দীর্ঘ সময় বাতাসের সংস্পর্শ পুষ্টির অপচয় ঘটবে।

● কেনার দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে শসা খাওয়া উচিত। এ ছাড়া ঘরের তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময়ের জন্য রেখে দেওয়া উচিত নয়।

● এয়ারটাইট পাত্রে এক সপ্তাহের জন্য ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

শসা রান্নার চেয়ে সালাদ করে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে। তবে যাঁদের আইবিএস বা হজমজনিত সমস্যা আছে; তাঁরা রান্না করে
খেতে পারেন।

 

লিনা আকতার

পুষ্টিবিদ, রায়হান হেলথ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.