প্রচণ্ড গরমে শরীরে নানা প্রকার সমস্যা দেখা দিতে পারে। হতে পারে ক্ষুধামান্দ্য। বেশির ভাগ মানুষই অভিযোগ করেন যে প্রচণ্ড গরমের জন্য কিছু খেতে ইচ্ছা করে না। এমনিতে খুব গরমে শরীর মন দুটোই খারাপ হয়, যার কারণে খাওয়াদাওয়ার ইচ্ছা আপনা-আপনিই কমে আসে।

তবে যদি শারীরবৃত্তীয় কারণ খুঁজতে যাই, তাহলে বলব, তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নানাভাবে দেহের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। বিশেষ করে হাইপোথ্যালামাস নামের অংশটি ক্ষুধাবোধ কমিয়ে ফেলে বা দমিয়ে রাখে কিছুটা। এ ছাড়া গরমে পেটের পীড়া বাড়ে, হজমের সমস্যা হয়। এ সময়ে আবার চারদিকে জ্বর, সর্দিকাশি ইত্যাদিও হচ্ছে বেশ। আর এই মৌসুমি ঠান্ডাজ্বরেও শরীর খুব দুর্বল হয়, সেই সঙ্গে হয় অরুচি।

সব মিলিয়ে গরমে অরুচি হতেই পারে। তবে এ নিয়ে খুব অস্থির হওয়ার কিছু নেই। বরং এই প্রচণ্ড গরমে সীমিত পরিমাণে খাওয়াদাওয়া করলেই শরীর ভালো থাকবে। তবে পর্যাপ্ত তরল বা তরলজাতীয় খাবার না খেলে চলবে না। খেয়াল রাখতে হবে, শরীরে পুষ্টির ঘাটতি যেন না হয়। হালকা, সহজপাচ্য খাবার, পর্যাপ্ত ফলমূল ও শাকসবজি, বেশি ঘাম হলে খাওয়ার স্যালাইন ইত্যাদি খেলে এই গরমে শরীর ভালো থাকবে। আর মুখে অরুচি হলে টকজাতীয় খাবার বেশ ভালো লাগে।

এই গরমে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।

তাই খাবারের তালিকায় টকজাতীয় খাবারের পাশাপাশি ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবারও রাখতে হবে। একসঙ্গে বেশি খাবার খেতে ইচ্ছা না হলে অল্প অল্প করে বারবার খাবার খাওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুমের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে শুধু শারীরিক নয়, মানসিক প্রশান্তিও নিশ্চিত হবে। শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের খাবারদাবারের দিকে আলাদা করে খেয়াল রাখা জরুরি। কারণ, তাপমাত্রার আধিক্যের কারণে তাঁরাই বেশি সমস্যায় পড়েন। প্রকৃতির রুদ্ররোষ থেকে বাঁচতে সবাইকেই সচেতন হতে হবে।

সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.