অন্তঃসত্ত্বা নারীর হরমোনের তারতম্য ঘটে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যায় কমে। দাঁতে গর্ত, শিরশির করা, ব্যথা, মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, ফুলে যাওয়াসহ নানা ঝুঁকি বাড়ে। এ সময় অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক প্রভৃতি সেবনে বিধিনিষেধ আছে। তাই নিজে নিজে কিছু না করে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

করণীয় কী: গর্ভধারণের সিদ্ধান্তের আগেই দন্তচিকিৎসকের পরামর্শে মুখের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেয়া জরুরি। গর্ভকালে মুখে কোনো সমস্যা হলে গর্ভধারণের সময়কাল, কোনো ওষুধ সেবন করছে কি না বা শরীরের অন্য কোনো সমস্যা আছে কি না, তা চিকিৎসককে স্পষ্ট করে বলতে হবে। এ সময়ে অনেকের রক্তে সুগারের মাত্রা বা রক্তচাপ বাড়তে পারে। গর্ভধারণের প্রথম ও শেষ তিন মাস সংবেদনশীল সময়। চাইলেও সব ধরনের ডেন্টাল চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। কারণ প্রথম তিন মাস গর্ভে শিশুর গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ তৈরি হয়। তখন ওষুধ সেবনে বিশেষ সতর্ক থাকতে হয়। শেষ তিন মাসে দাঁতের চিকিৎসা ঝুঁকিপূর্ণ।

তবে এরপরও রোগ পুষে রাখার সুযোগ নেই। বিশেষ প্রয়োজনে মাড়ি রোগের চিকিৎসা, মার্কারিমুক্ত ফিলিং, এমনকি রুট ক্যানেলের মতো চিকিৎসা নেয়া যায়। মাঝখানের তিন মাস অনেকটা নিরাপদ। তবে জরুরি অবস্থা ছাড়া বড় ধরনের চিকিৎসা না নেয়াই ভালো। একজন বিশেষজ্ঞ দন্তচিকিৎসক এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।

অনেক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়, মাড়ির রোগ পুষে রাখা, চিকিৎসককে গর্ভধারণের বিষয়টি না বলা, অবশকরণ পদ্ধতি, বেশ কিছু চিকিৎসা যন্ত্রপাতির ব্যবহার, এমনকি অসতর্কতামূলক ডেন্টাল এক্স-রে থেকেও অপরিণত গর্ভপাত, শিশুর জš§গত জটিলতা বা ত্রুটি, মায়ের স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।

দাঁতে ব্যথায় এসিটামিনোফেন বা প্যারাসিটামল, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে অ্যামোক্সিসিলিন, সেফালেক্সিন, অ্যাজিথ্রোমাইসিন, মেট্রোনিডাজল মোটামুটি নিরাপদ। সঠিক উপায়ে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ ও ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহারে মুখের রোগ অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়। মাউথওয়াশ ব্যবহারে অ্যালকোহলমুক্ত ফ্লুরাইড মাউথওয়াশ নিরাপদ। কারণ যেকোনো মাউথওয়াশ সামান্য হলেও ভেতরে প্রবেশ করতে পারে।

 

ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ

রাজ ডেন্টাল সেন্টার

কলাবাগান, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.