অটোটক্সিসিটি মানে হলো কোনো ওষুধ বা রাসায়নিক দ্রব্যের কারণে সৃষ্ট অন্তঃকর্ণের কার্যকরিতা আংশিক বা সম্পূর্ণ হ্রাস পাওয়া। আমাদের নিত্যব্যবহƒত কিছু ওষুধ অটোটক্সিসিটি করতে পারে, অর্থাৎ কানের ক্ষতি করতে পারে। আসুন এ সম্পর্কে জেনে নিইÑ

অ্যামিনোগ্লাইকোসাইডস: নিওমাইসিন ও ক্যানামাইসিন প্রধানত কানের শ্রবণ অংশ এবং জেন্টামাইসিন ও টোব্রামাইসিন কানের ভারসাম্যপূর্ণ অংশের ক্ষতি করে। এন্ডোলিম্ফ ও স্কাইরাল লিগামেন্ট থেকে পেরিলিম্ফে অ্যামিনোগ্লাইকোসাইডের নিঃসরণ ঘটে, যার ফলে অন্তঃকর্ণের সংবেদনশীল কোষগুলো ধ্বংস হয়। রোগী টিনিটাস (চারদিক নিস্তব্ধ থাকার পরও কানে অস্বাভাবিক শব্দ শোনা), উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি সংবেদনশীল শ্রবণশক্তি হ্রাস ও মাথা ঘোরার অভিযোগ করেন। এ ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পর লক্ষণগুলো পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন।

ডায়ারুটিক: শরীরে জমা পানি বের করতে কিডনি ও হƒদরোগীরা ডাইইউরেটিক ওষুধ ব্যবহার করেন। উচ্চ মাত্রায় ফ্রুসেমাইড, বুমেটামাইড ও ইথাক্রাইনিক অ্যাসিড বিপরীতমুখী উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি সংবেদনশীল শ্রবণশক্তি হ্রাসের কারণ হতে পারে।

সাইটোটক্সিক এজেন্ট: সিসপ্ল্যাটিন একটি সাধারণ অটোটক্সিক ওষুধ, যা কানের ক্ষতি করে।

বিটা-ব্লকার: হƒদরোগে ব্যবহƒত এ ওষুধ কারও কারও মিশ্র বধিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

স্যালিসাইলেটস: অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যাসপিরিন টিনিটাস ও ৬০ ডিবি পর্যন্ত ফ্ল্যাট সেন্সোরিনিয়াল শ্রবণশক্তি হ্রাস করতে পারে।

কুইনাইন: কুইনাইনের কক্লিওটক্সিক প্রভাব রয়েছে। এতে শ্রবণশক্তি স্থায়ীভাবে নষ্ট হতে পারে।

অ্যান্টিকনভালসেন্টস: খিঁচুনিতে ব্যবহƒত ফেনাইটোইন ও ইথোসুক্সিমাইড ভেস্টিবুলোটক্সিক কানের নানা রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

কী করবেন: সব ওষুধ সবার একই রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। তবু উপরোক্ত ওষুধ ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকা ভালো। কোনো ওষুধ সেবনের পর যদি কানে কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, মাথা ঘোরে, কানে শব্দ হয় বা কম শোনা যায়, তবে সঙ্গে সঙ্গে ওষুধটি বন্ধ করে দিতে হবে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী

বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি

আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.