২৯ অক্টোবর বিশ্ব স্ট্রোক দিবস পালিত হয়ে গেল। সচেতনতা তৈরি করা এখন সবার দায়িত্ব। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ জরুরি’।
অনেকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পরও নিজের প্রতি যত্নবান হোন না। যার ফলে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি তিন সেকেন্ডে একজন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। যার বেশিরভাগই মৃত্যুবরণ করে। কারণ তাদের ব্রেনে স্ট্রোক হয়। তা ছাড়া নন-কমিউনিকেশন ডিজিজ হিসেবে স্ট্রোককে বর্তমানে তৃতীয় মৃত্যুর কারণ বলা হয়। সাধারণত স্ট্রোক দুই ধরনের। ব্রেনের অভ্যন্তরীণ রক্তনালীগুলোর মধ্যকার রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে, অর্থাৎ রক্তনালীগুলোর মধ্যকার জমা হয়ে থাকা চর্বি, যা মেডিক্যাল ভাষায় থ্রোম্বো এম্বোলিজমের কারণে হয়ে থাকে। যাকে ইসকেমিক স্ট্রোক বলে। দ্বিতীয় হলো হেমোরেজিক স্ট্রোক, যা ব্রেনের অভ্যন্তরীণ রক্তনালী ছিঁড়ে ব্রেনের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে এবং আক্রান্ত স্থানের টিস্যুগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যার ফলে রোগীর বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
যেমন : শরীরের একপাশ ঝিমঝিম বা অবশ অবশ মনে হওয়া অথবা শক্তি কমে যাওয়া। মুখ বেঁকে যাওয়া অথবা আক্রান্ত পাশের হাত-পা নাড়াতে না পারা ইত্যাদি। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো ইসকেমিক স্ট্রোক বা হেমোরেজিক স্ট্রোক উভয়েরই উপসর্গ একই। তাই রোগ নির্ণয়ের জন্য ব্রেনের সিটি স্ক্যান বা এমআরআই খুব জরুরি। কারণ দুই ধরনের স্ট্রোকের চিকিৎসা সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের।
যখন একজন ব্যক্তি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে শরীরে একপাশ প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়, তখন তার করণীয় কী? এ বিষয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। অনেকের ধারণা এ ধরনের প্যারালাইসিসের কোনো চিকিৎসা নেই।
এটা একেবারেই ভুল কথা। একজন রোগী স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে যদি তার রোগ নির্ণয় করা যায় যে ইসকেমিক স্ট্রোকের কারণে প্যারালাইসিস হয়েছে, তাহলে থ্রোম্বো এম্বলিক এজেন্ট ইনজেকশন আকারে দিলে রোগী খুব দ্রুত সুুস্থ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ সচেতনতার অভাবে দেরিতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়। ফলে সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হয়। তাই দেরিতে কোনো কিছুই ঠিক না। আর স্ট্রোক যদি হয়েই যায়; তবে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য কিন্তু পরিবারের দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রয়োজন খুব জরুরি।
পাশাপাশি একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখা জরুরি।
‘ঢাকা সিটি ফিজিও থেরাপি হাসপাতাল। বাড়ী : ১২/১ রোড: ৪/এ, ধানমণ্ডি