চারদিকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা অনেক কারণেই হতে পারে। গরমে যেমন ডায়রিয়া হয়, শীতেও এর প্রকোপ বাড়তে পারে। ডায়রিয়া হলে সবাই কী খাবেন, সেটা নিয়ে বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন। যেহেতু এটি পেটের সমস্যা, তাই এ সময় কী খাওয়া উচিত আর কী খাওয়া উচিত নয়, এ ব্যাপারে নানা ধরনের সংশয় কাজ করে। এ নিয়ে নানা কুসংস্কারও আছে।

কী খাওয়া যাবে, কী খাওয়া যাবে না:  আসলে পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হলে তেমন বিশেষ কোনো খাবারের প্রয়োজন নেই। বলা হয়, দৈনন্দিন স্বাভাবিক খাবারই এ সময় খাওয়া যায়। তবে গুরুপাক বা তৈলাক্ত খাবার, অতিরিক্ত মসলাদার খাবার এবং চা-কফি পরিহার করাই ভালো। কারণ এসব খাবারে হজমশক্তির ব্যাঘাত ঘটে বলে পাতলা পায়খানার সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।

ডায়রিয়ায় শরীর পানিশূন্য হয়ে যায় বলে এই সময় তরল বা তরলজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া দরকার। বিশেষ করে খাওয়ার স্যালাইন, চিড়ার পানি, ভাতের মাড় ইত্যাদি খাবার খেলে পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করা যায়।

পাতলা পায়খানা হলে পানির সঙ্গে সঙ্গে শরীরে লবণের ঘাটতিও ঘটে। তাই এ সময় ডাবের পানি শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। তবে লবণ ও পানিশূন্যতা প্রতিরোধে খাওয়ার স্যালাইনের বিকল্প নেই।

পাতলা পায়খানা হলে একটা বিশেষ প্রচলিত খাবার হচ্ছে কাঁচকলা সেদ্ধ বা কাঁচকলার তরকারি। কাঁচকলায় আয়রন, পটাশিয়ামসহ আরও অনেক খনিজ পদার্থ আছে। আয়রন যেহেতু কোষ্ঠকাঠিন্য করতে পারে, তাই কাঁচকলা খেলে মল একটু শক্ত হয়।

দই বা ঘোলে থাকে প্রোবায়োটিকস বা উপকারী ব্যাকটেরিয়া। তাই অনেকের মতে ডায়রিয়া হলে এসব খাবার খেলে অবস্থার উন্নতি হতে পারে। অতিরিক্ত পাতলা পায়খানার কারণে শরীর যেমন পানিশূন্য হয়ে কিডনির ক্ষতি করতে পারে, তেমনি শরীরের উপকারী লবণের ঘাটতি হলে নানা জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। তাই ডায়রিয়া হলে কোনো বিশেষ খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে এমন খাবার বেছে নিতে হবে, যেগুলো খেলে পানিশূন্যতা প্রতিরোধের পাশাপাশি লবণের ঘাটতি পূরণ করা যায়। সুতরাং ডায়রিয়া হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাওয়ার স্যালাইন এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ খাবারগুলো খেলেই চলবে। তেমন বিশেষ কিছুর প্রয়োজন পড়ে না।

 

ডা. শাহনূর শারমিন

সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.