মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহৎ সন্ধিগুলোর একটি হাঁটু।

এটি মূলত তিনটি হাড় অর্থাৎ ফিমার, প্যাটেলা ও টিবিয়া বা শিন বোন দিয়ে তৈরি।

হাঁটুব্যথার কারণ: হাঁটুর ক্ষয়রোগ, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় অস্টিওআর্থ্রাইটিস বলে। হাঁটুর হাড়গুলোয় থাকা তরুণাস্থি প্রাথমিকভাবে ক্ষয় হতে থাকে। ফলে জোড়ার মাঝের ফাঁকা জায়গা কমে যায় ও ব্যথার সৃষ্টি হয়। এটি সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়ে থাকে। সন্ধিতে উৎপন্ন হওয়া সাইনোভিয়াল ফ্লুইড কমে হাঁটুর হাড়গুলোর পরস্পরের মধ্যে ঘর্ষণ হলে, সন্ধির কার্টিলেজ ভেঙে গেলে, লিগামেন্টে ইনজুরি হলে, ইনজুরির পর অস্ত্রোপচার সফল না হলে, কিংবা অস্ত্রোপচারের পর দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ কাজগুলোয় হাঁটুর ব্যবহার না করলে, সন্ধিতে বিভিন্ন প্রদাহ বা ইনফ্ল্যামেশন থেকে, ওজন বেড়ে হাঁটুর ওপর ধকল বেশি হলে, হাঁটুর গাঁটে আঘাত লাগলে, ভারী জিনিস তোলার ফলে, ক্রমাগত উঁচু সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে, দেহে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়লে এবং এনকাইলজিং স্কন্ডিলাইসটিস ও রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কারণে। সাইনোভিয়াল ফ্লুইডের কম উৎপাদনে যেমন হাঁটুতে ব্যথা হয়, তেমনি বেশি ফ্লুইড উৎপন্ন হয়ে হাঁটুর পেছন দিকে জমে যায়। ফলে হাঁটুর জোড়া শক্ত হয়ে যায় ও ব্যথা অনুভূত হয়।

চিকিৎসা: রোগীর লক্ষণগুলোর চিকিৎসা: এ ক্ষেত্রে মূলত লক্ষণ দেখে এর ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, কোনো রোগী যদি হাঁটুর প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে আসে, ব্যথা কমানোর ব্যবস্থা করা; হাঁটু ভাঁজ করতে সমস্যা হলে তার সমাধান দেয়া প্রভৃতি।

রোগের কারণ প্রথমে খুঁজে বের করে রোগ নির্ণয়ের পর চিকিৎসা দেয়া হয়। অর্থাৎ হাঁটুর কাঠামোগত পরিবর্তনসহ মাংসপেশির দুর্বলতা ও সংকোচন আছে কি না, তা নির্ণয় করে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ-জাতীয় সমস্যা সমাধানে আধুনিক চিকিৎসা হলো, সমন্বিত চিকিৎসাপদ্ধতিসহ ফিজিওথেরাপি। এতে রয়েছে ইলেকট্রোমেডিসিন, ক্লিনিক্যাল ড্রাই নিডেল, শক ওয়েভ থেরাপিসহ বিভিন্ন ধরনের থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ।

 

দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী

কনসালট্যান্ট (ফিজিওথেরাপি)

চৌধুরী ফিজিওথেরাপি সেন্টার, মিরপুর ১০, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.