অন্তঃসত্ত্বা নারীর ওজন বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। কেননা প্রতি মাসে অন্তঃসত্ত্বা নারীর ওজন মেপে গর্ভে থাকা শিশুর বৃদ্ধির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হয়। সাধারণত গর্ভকালীন ১০ মাস সময়ে কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারীর ১০-১২ কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়তে পারে। তবে আগে থেকেই যেসব নারী কিছুটা স্থূলকায়, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর তাদের ওজন আরও বেড়ে যায়। এ কারণে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিতে গেলে এসব নারীর জটিলতার ঝুঁকিও বাড়ে।
অন্তঃসত্ত্বা নারীর মেরুদণ্ডে এপিডুরাল ফ্যাট বেড়ে যায়। ফলে অনেকটা সরু হয়ে যায় মেরুদণ্ডে নলের মতো থাকা সুষুষ্মা কাণ্ড। গর্ভাবস্থায় যেসব অন্তঃসত্ত্বা নারীর ওজন অনেক বেশি বাড়ে, তাদের সুষুষ্মা কাণ্ড অনেক বেশি সরু হতে দেখা যায়। এর ফলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেয়ার সময় এসব নারীকে অচেতন করতে গিয়ে চিকিৎসক ও অবেদনবিদদের সমস্যায় পড়তে হয়।
গর্ভাবস্থায় জরায়ুর আকার বেড়ে যাওয়ায় অনেক নারীর ফুসফুসের সম্প্রসারণক্ষমতা অনেকটা কমে যায়। আবার তুলনামূলকভাবে স্থূলকায় অনেকের অবস্ট্রাকটিভ সিøপ এপনিয়া থাকে। এসব অন্তঃসত্ত্বা নারীকে অস্ত্রোপচারের সময় অচেতন করতে জ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞ অবেদনবিদের দরকার হয়। সব জায়গায় তা পাওয়া সম্ভব হয় না।
স্থূলকায় অন্তঃসত্ত্বা নারীর রক্ত জমাট বেঁধে জটিলতা দেখা দেয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। এ ছাড়া বাড়তি ওজনের কারণে অন্তঃসত্ত্বা নারীর শিরা খুঁজে পেতেও সমস্যায় পড়তে হয়। তাই অস্ত্রোপচারের সময় সিভি লাইন বা আলট্রাসাউন্ড গাইডেড ক্যানুলা করতে পারেন, এমন অভিজ্ঞ অবেদনবিদের সহযোগিতা নেয়া প্রয়োজন।
মো. মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী
বিভাগীয় প্রধান, ইমার্জেন্সি
অ্যানেসথেসিয়া ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন
আহমদ হাসান মেমোরিয়াল হাসপাতাল, কক্সবাজার