গর্ভ নয়, অথচ নিজেকে গর্ভবতী মনে করা। এ রকম ঘটনার মুখোমুখি আমাকে বেশ কয়েকবার হতে হয়েছে। মাসিক বন্ধ অনেক কারণেই হয়ে থাকে, তার মধ্যে প্রেগন্যান্সি অন্যতম কারণ।

ধীরে ধীরে পেট বড় হতে থাকে, বিশেষ করে ওজন যাদের বেশি। অনেকে বাচ্চার নড়াচড়াও বুঝেন বলে জানান। এসবই ঘটে মানসিক পরিবর্তনের জন্য। তাদের পেটে হাত দিয়ে আমরা সহজে জরায়ু শনাক্ত করতে পারি না। তাদের হিসাবে ১০ মাস হয়ে গেলে অনেকে ব্যথাও অনুভব করে থাকেন।

আজকাল হাতের নাগালে আলট্রাসনোগ্রাফি করার সুযোগ থাকায় অতি সহজেই আমরা বলতে পারি যে তিনি গর্ভবতী নন।

আমি যখন ১৯৮৫ সাল থেকে চিকিৎসা পেশায় আসি তখন আল্ট্রাসাউন্ড হাতের নাগালে ছিল না। তখন ইউরিন টেস্ট করিয়ে ভুল ভাঙাতে হতো। ওই সময় গ্রামাঞ্চলের অনেক নারী কোনো টেস্ট করাতেন না, চিকিৎসকের কাছে যেতেন অনেক পরে।
এই প্রসঙ্গের অবতারণা করেছি পাবনার ঘটনা শোনার পর। ওখানে সবারই দোষ ছিল। ক্লিনিক, ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট গাইনিকোলজিস্টের। তিনি পাবনার একজন স্বনামধন্য গাইনীকোলজিস্ট।

২০০১ সাল থেকে তিনি ওই এলাকায় সেবা দিয়ে এসেছেন, অনেক মা ও নবজাতকের জীবন বাঁচাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। আজ পরিণত বয়সে এমন ভুল তার পক্ষে সম্ভব না হলেও তিনি ভুল করেছেন এবং মিডিয়াতে তিনি তা স্বীকারও করেছেন।

হলুদ সাংবাদিকতার কারণে তাকে বাচ্চা চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। যতদূর জানতে পেরেছি রোগীর লোকজন False pregnancy (ভুয়া গর্ভধারণ) ব্যাপারটা বুঝতে পেরে তাঁদের অভিযোগ তুলে নিয়েছেন।

আসুন কোনো সংবাদ ভাইরাল করার আগে একবার সত্যতা যাচাই করি।

 

লেখক:

ডা. সুধাকর কৈরী

প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ

 

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.