পারকিনসনস ডিজিজ (পিডি) আক্রান্ত রোগীর জন্য একটি কষ্টকর ও বেদনাদায়ক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এটি মস্তিষ্কের একটি ক্ষয়জনিত অবস্থা; যার কিছু লক্ষণ শারীরিক। যেমন ধীরগতি, হাতের কাঁপুনি, অনমনীয়তা। আবার কিছু লক্ষণ জ্ঞানজনিত ও মানসিক। যেমন পরিজ্ঞানীয় দুর্বলতা, মানসিক রোগ, ঘুমের সমস্যা, ভুলে যাওয়া, ব্যথা ইত্যাদি। এ রোগের কোনো না কোনো ধাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ লোক বিষণ্নতার সম্মুখীন হন ও ৪০ শতাংশ উদ্বেগজনিত সমস্যা অনুভব করেন; যা তাদের দৈনন্দিন কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়, জীবনের মান হ্রাস করে।
বিষণ্নতা নির্ণয়ের চ্যালেঞ্জ
# কিছু বিষণ্নতার লক্ষণ পারকিনসনস রোগের লক্ষণের সঙ্গে ‘ওভারল্যাপ’ করে। উদাহরণস্বরূপ, ঘুমের সমস্যা ও শ্লথ বা সেøানেস অনুভূতি। তাই, পারকিনসনসে বিষণ্নতা শনাক্ত করা কঠিন হতে পারে।
# পারকিনসনসের বিষণ্নতা নির্ণয়কে জটিল করে তুলতে পারে মুখের মাস্কিং ইফেক্ট। মুখের পেশিতে সমস্যা হওয়ার কারণে পারকিনসনস আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে দৃশ্যমানভাবে আবেগ প্রকাশ করা বা এক্সপ্রেশন করা কঠিন।
# পারকিনসনস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়ই নিজের সমস্যা ও লক্ষণগুলো ব্যাখ্যা করতে অক্ষম। তাই তারা চিকিৎসা নিতে চান না।
বিষণ্নতা পারকিনসনস রোগীর নড়াচড়া, চলাচল ও জ্ঞান বা চেতনাজনিত উপসর্গগুলো তীব্রতর করে তুলতে পারে।
পরিত্রাণ কী
# মনস্তাত্ত্বিক কাউন্সেলিং, বিশেষ করে কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (সিবিটি) বিষণ্নতা ও উদ্বেগ কমাতে, চিন্তাভাবনা ও আচরণের ধরন চিনতে ও পরিবর্তন করতে সহায়তা করে।
# রুটিনমাফিক ব্যায়াম-হাঁটা, ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করা, যোগব্যায়াম, বাগান করা ইত্যাদি, যা রোগী উপভোগ করেন, তা হতাশার লক্ষণগুলো কমিয়ে দিতে পারে।
# সহানুভূতিপূর্ণ পরিবেশ ও অন্যদের ইতিবাচক মনোভাব সাহায্য
করতে পারে।
অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী
ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, আগারগাঁও, ঢাকা