ঘুমের সমস্যা এখন প্রায় ঘরে ঘরে। নানা রকম উদ্বেগ, চাপ, টেনশন মানুষের ঘুমের সমস্যা বাড়িয়েছে। ভালো ঘুমের জন্য বিশেষ পরিবেশ যেমন দরকার, তেমন কিছু ব্যায়াম ঘুমের সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

কার্ডিও

কার্ডিও ব্যায়াম হচ্ছে সেই ব্যায়াম, যা হৃদপেশি ও ফুসফুসের দক্ষতা বাড়ায়। দৌড়ানো, সাইক্লিং, সাঁতার ইত্যাদি এ ধরনের ব্যায়াম। দিনের বেলা এ ধরনের ব্যায়াম করলে শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। এ ব্যায়ামে পেশি ব্যবহৃত হয় বলে দিন শেষে ক্লান্তি আসে, যা ভালো ঘুমের সহায়ক। তবে এ ধরনের ব্যায়াম খাবারের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে করা উচিত, ঘুমের ঠিক আগে নয়।

স্ট্রেচিং

শরীরকে শিথিল বা রিলাক্স করার জন্য নরম স্ট্রেচিং উপকারী। এটি পেশিকে শিথিল করে ঘুমাতে সাহায্য করে।

যোগব্যায়াম

নানা ধরনের যোগব্যায়াম, বিশেষ করে ধ্যান বা মেডিটেশন, ব্রিদিং এক্সারসাইজ বা ঘন শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম মানসিক চাপ বা স্ট্রেস দূর করে। এ ব্যায়াম ভালো ঘুমের জন্যও সাহায্য করে।

হালকা ব্যায়াম

হাঁটাহাঁটি বা দৈনন্দিন কাজকর্ম, যেমন বাগান পরিচর্যা, ঘরের কাজ—এগুলোও ঘুমের জন্য সহায়ক। বিশেষ করে ঘুমের আগে কয়েক ঘণ্টা এমন ব্যায়াম বেশ কার্যকর।

ঘুমের পরিবেশ

এ ছাড়া ভালো ঘুমের জন্য চাই ঘুমবান্ধব পরিবেশ। কিছু চর্চা ও সু-অভ্যাসও। যেমন

  • প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া ও ওঠা; অর্থাৎ ঘুমের সূচি মেনে চলা।
  • ঘুমানোর কাছাকাছি সময় অতিরিক্ত পরিশ্রম, তীব্র মাত্রার ব্যায়াম না করা। তবে হালকা কাজকর্ম করা যেতে পারে।
  • ঘুমানোর অন্তত এক থেকে দুই ঘণ্টা আগে থেকে স্ক্রিনটাইম বন্ধ করবেন। যার মানে হলো মুঠোফোন, টেলিভিশন ও কম্পিউটারের স্ক্রিন বন্ধ রাখবেন।
  • বিছানায় যাওয়ার আগে শিথিলকরণ বা রিলাক্সেশন ব্যায়াম, ধ্যান বা মেডিটেশন, বই পড়া, ভালো গান শোনা উপকারে আসতে পারে।
  • শোবার ঘর হালকা অন্ধকার, শান্ত, ঠান্ডা, আরামদায়ক রাখা উচিত। বিছানা-বালিশও হতে হবে আরামদায়ক।
  • সন্ধ্যার পর ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল পরিহার করা উচিত।
  • ঘুমের সমস্যার জন্য কোনো শারীরিক সমস্যা দায়ী থাকলে, এর চিকিৎসা নিতে হবে। যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া, অ্যাজমা, বদহজম ইত্যাদি।

 

এম ইয়াছিন আলী

চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্টঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতালধানমন্ডিঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.