চাকরিজীবীদের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসে থাকতে হয়। অনেক সময় সকালে তাড়াহুড়ার কারণে সঠিক নাশতা খাওয়া হয় না। আবার অফিসে নানা কাজে খাওয়ার সময় পেরিয়ে যায়। এতে পুষ্টির ঘাটতি হয়, ক্লান্তি বোধ হয় এবং মেজাজ খিটখিটে থাকে। আবার বাইরের কেনা খাবার খেলে ওজন বেড়ে যায়। নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাহলে চাকরিজীবীরা কীভাবে সুস্থ একটি খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখবেন। সব সময় বাইরের খাবার খেলে কী শারীরিক সমস্যা হতে পারে? এতে ওজন বৃদ্ধি, অ্যাসিডিটি বা আলসার, কম ঘুম, নানা শারীরিক অসুস্থতা, যেমন ডায়রিয়া, টাইফয়েড ও আমাশয়ের মতো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চেষ্টা করতে হবে যত কষ্টই হোক বাড়ি থেকে বিশুদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ে যাওয়ার।

খাবারের তালিকা: সকালের নাশতা খেতে হবে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে। দুটি রুটি, এক কাপ সবজি, ডিম অথবা ওটস, দুধ বা টক দই এবং যেকোনো ফল। মনে রাখবেন, সকালের খাবার আপনার সারাদিনের কর্মদক্ষতা ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সরাসরি প্রভাব ফেলে। তাই যত তাড়াই থাকুক, খাবার না খেয়ে বাসা থেকে বের হবেন না।

মধ্য-সকালের নাশতা: বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে এক মুঠো বাদাম বা যেকোনো ফল, চিনি ছাড়া এক কাপ গ্রিন টি বা কফি। এই সময়ে অনেকেই শিঙাড়া, সমুচা, পুরি বা ডুবোতেলে ভাজা বিভিন্ন নাশতা খেয়ে থাকেন, যার ফলে পেটে গ্যাস হওয়াসহ নানা সমস্যা হতে পারে।
দুপুরের খাবার: বেলা ১টা থেকে ২টার মধ্যে ভাত ১ কাপ (১২০ গ্রাম), মাছ বা মাংস ১-২ টুকরা (৬০ গ্রাম), শাকসবজি বা সালাদ ১ বাটি (মাঝারি) ও ডাল আধা কাপ। সম্ভব হলে দুপুরের খাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়াই ভালো।

বিকালের নাশতা: বিকাল ৪টা থেকে ৫টায় একটা ফল, যেমন পেয়ারা, আপেল, আমড়া অথবা বিস্কুট (ক্রিম ছাড়া)।
রাতের খাবার: ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ভাত এক কাপ বা পাতলা রুটি দুটি; মাংস দু-তিন টুকরা; সবজি-সালাদ এক বাটি (মাঝারি), লেবু এবং ঘুমানোর আগে এক কাপ টক দই বা কম চর্বির দুধ খাওয়া যায়।

কিছু টিপস: রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে সকালে অফিসে যাওয়ার অন্তত এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে জাগলে সারাদিনের কাজ পরিকল্পনামাফিক করা সম্ভব। প্রতিদিন আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা জোরে হাঁটতে হবে। এতে শরীর ও মন দুটিই ভালো থাকে। বাইরের ভাজা খাবার না খেয়ে ব্যাগে হালকা খাবার, যেমন চিনি ছাড়া পাতলা বিস্কুট, বাদাম বা ফল রাখবেন। সব টিনজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন সসেজ, নাগেট, ড্রাই ফ্রুট, কেক প্রভৃতি পরিহার করা উচিত। যতটা সম্ভব সময়মতো খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।

 

ফারজানা ওয়াহাব

পুষ্টিবিশেষজ্ঞ, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.