চোখের গ্লুকোমা হলে অপটিক স্নায়ু সরাসরি আক্রান্ত হয়। অপটিক স্নায়ু চোখের মাধ্যমে মস্তিষ্কে তথ্য পাঠায়। তাই এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। গ্লুকোমা নানা ধরনের হয়। সঠিক সময়ে এর সঠিক চিকিৎসা না হলে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা থাকে।

লক্ষণ: অন্যতম লক্ষণÑবমি-বমি ভাব, ক্রমাগত চোখ ও মাথাব্যথা, চোখ লাল হওয়া, ঝাপসা দৃষ্টি, রংধনুর মতো বলয় দেখা, চোখে অস্বস্তি বোধ, ক্রমাগত জ্বালা ও চুলকানি।

কেন হয় গ্লুকোমা: চোখের পেছনে জলীয় হিউমার নামে একটি তরল তৈরি হয়। এই তরল আইরিস ও কর্নিয়ার মাধ্যমে চোখের সামনে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কোনো প্রতিবন্ধকতার কারণে এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে চোখে চাপ পড়ে, যাকে বলা হয় ইন্ট্রাওকুলার প্রেশার। এটি বাড়লে অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া ওষুধের প্রতিক্রিয়া, রক্তপ্রবাহের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, চোখের ড্রপ এবং চোখের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে গ্লুকোমা হতে পারে।

কয়েক ধরনের গ্লুকোমা

ওপেন অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা (দীর্ঘস্থায়ী): প্রাথমিক উপসর্গগুলো ততটা স্পষ্ট নয়। অবস্থা তীব্র হলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করে।

ক্লোজড অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা: এটি একটি জরুরি অবস্থা। হিউমার তরল হঠাৎ ব্লক হলে উপস্থিত তরল চোখের পেছনে জমা হয়। এটি চোখের ওপর তাৎক্ষণিক চাপ তৈরি করে, ফলে তীব্র মাথাব্যথা ও দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়।

জš§গত গ্লুকোমা: চোখের কোণটি জš§গতভাবে ত্রুটিযুক্ত, যা তরলটির স্বাভাবিক নিষ্কাশনে বাধা দেয়।

সেকেন্ডারি গ্লুকোমা: ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও চিকিৎসার ট্রমায় এটি হয়। এর কারণ হলো দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ওষুধ সেবন, ডায়াবেটিস, চোখের প্রদাহ, ছানির অগ্রগতি পর্যায়, চোখে ট্রমা।

ম্যালিগন্যান্ট গ্লুকোমা: একধরনের বিরল অবস্থা, দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। ক্লোজড বা ওপেন অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমার ইতিহাসসহ বেশিরভাগ লোকেরই এ গ্লুকোমা হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

 

অধ্যাপক ডা. ইফতেখার মো. মুনির

বিভাগীয় প্রধান, গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞ

বাংলাদেশ আই হসপিটাল, মালিবাগ, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.