গর্ভাবস্থায় কিছু শারীরিক জটিলতা স্বাভাবিক। কিন্তু এ সময় কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। সুতরাং প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা ও সঠিক চিকিৎসা।
ঝুঁকি:
১. গর্ভপাত: ৭৫ শতাংশ গর্ভপাত হয় প্রথম ৩ মাসেই। নানা কারণে গর্ভপাত হতে পারে। যেমন বাচ্চার জিন বা গঠনগত ত্রুটি, মায়ের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য, এসএলই, অ্যান্টি-ফসফোলিপিড সিনড্রোম, ইনফেকশন প্রভৃতি;
২. জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ বা এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি: নিষিক্ত ভ্রƒণ জরায়ুর ভেতরে স্থাপিত না হয়ে বাইরে স্থাপিত হয়, বিশেষ করে ডিম্বনালিতে ভ্রƒণ বাড়তে থাকে, যা পরে ফেটে রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে। সঠিক চিকিৎসা না হলে মায়ের মৃত্যুও হতে পারে;
৩. মোলার প্রেগন্যান্সি: নিষিক্ত ভ্রƒণ থেকে বাচ্চা না হয়ে আঙুরের থোকার মতো এক ধরনের টিউমার হয়, যার সঠিক চিকিৎসা না নিলে পরে ক্যানসারে রূপ নিতে পারে;
৪. বাচ্চার জš§গত ত্রুটি: গর্ভের প্রথম তিন মাস ভ্রƒণ গঠনের মূল সময়। এ সময় ধূমপান, মদ্যপান, মায়ের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, নানা সংক্রমণ, ক্ষতিকর ওষুধ সেবন, যেমন ওয়ারফেরিন, মৃগী রোগের ওষুধ, ক্যানসারের ওষুধ, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, রেডিয়েশন ইত্যাদি বাচ্চার জš§গত ত্রুটির কারণ হতে পারে।
করণীয়: গর্ভধারণের আগে থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রাথমিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে ও কোনো রোগ নির্ণয় হলে চিকিৎসা করতে হবে; গর্ভধারণের এক মাস আগে থেকে ফলিক অ্যাসিড সেবন করতে হবে; গর্ভধারণের সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে ও ক্ষতিকর ওষুধ বর্জন করতে হবে; আলট্রাসনোগ্রাফি: গর্ভধারণের প্রথম দিকে আলট্রাসনোগ্রাফি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এই পরীক্ষার মাধ্যমে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। যেমন ভ্রƒণের সংখ্যা ও বয়স, বাচ্চা প্রস্রবের সম্ভাব্য তারিখ, ভ্রƒণের হƒদস্পন্দন, এক্টোপিক বা মোলার প্রেগন্যান্সি প্রভৃতি; বিশ্রাম: এ সময় পর্যাপ্ত বিশ্রাম দরকার। কমপক্ষে রাতে আট ঘণ্টা ও দুপুরে দুই ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে হবে।
ডা. মারুফা খাতুন
সহকারী অধ্যাপক, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ
ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল