মেরুদণ্ডের ডিস্ক প্রোলাপ্স কোমরব্যথার অন্যতম কারণ। জীবনে কোমরব্যথা হয়নি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এ ব্যথা অনেক কারণেই হয়ে থাকে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, ৮০ শতাংশের বেশি কোমরব্যথার প্রধান কারণ প্রোলাপ্স লাম্বার ইন্টারভার্টিবাল ডিস্ক (পিএলআইডি)।

আমাদের মেরুদণ্ড থরে থরে সাজানো কাশেরুকা বা ভার্টিবা দিয়ে তৈরি। দুটি কশরুকার মাঝখানে একধরনের কার্টিলেজ (তরুণাস্থি) থাকে; যা শক্ত না, আবার নরমও না। অনেকটা পিচ্ছিল ও জেলি টাইপের। একে ডিস্ক বলা হয়।

অনেক সময় আঘাতের কারণে বা হাড়ক্ষয়ের কারণে এই ইন্টারভার্টিবাল ডিস্ক বেরিয়ে আশপাশের নার্ভ, স্পাইনাল কর্ডে চাপ দেয়। ফলে কোমরব্যথা শুরু হয়। অনেক সময়ে এ ব্যথা পায়ের পেশি পেরিয়ে নিচ পর্যন্ত চলে যায়। এতে পা ঝিনঝিন করে, অবশ লাগে। দাঁড়িয়ে থাকলে এবং হাঁটতে গেলে বেশি কষ্ট হয়। কখনো আবার রোগী বসতে পারে না। মাঝেমধ্যে দেখা যায়, রোগী কোমর বাঁকা করে এক দিকে হেলে হাঁটছে।

যেকোনো কোমরব্যথার কারণ নির্ণয় করা ও সঠিক চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। কখনো কখনো রোগীরা কিডনিজনিত ব্যথার সঙ্গে কোমরব্যথা মিলিয়ে ফেলেন। ফলে চিকিৎসা নিতে বিলম্ব করেন।

ব্যথা পিএলআইডি নাকি, কিডনিজনিত

  • পিএলআইডির ব্যথা সাধারণত কোমর ও কোমরের পেছন দিয়ে ঊরু এবং পায়ের পেছন দিক দিয়ে পায়ের পাতা পর্যন্ত যেতে পারে। কিন্তু কিডনিজনিত ব্যথা কোমর এবং কোমর থেকে পায়ের সামনের দিকে অর্থাৎ ঊরুর সামনের দিক দিয়ে হাঁটু পর্যন্ত আসে।
  • কিডনিজনিত কোমরব্যথা হলে বমি, বমিভাব বা হালকা জ্বরও হতে পারে। প্রস্রাবে জ্বালা থাকতে পারে। পিএলআইডিজনিত ব্যথায় সাধারণত বমি হয় না।

চিকিৎসা

পিএলআইডি বা অন্য যেকোনো কারণেই কোমরব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। যত বিলম্ব হবে, রোগীর অবস্থা তত খারাপ দিকে যাবে। প্রস্রাব–পায়খানার ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেলে অস্ত্রোপচার ছাড়া রোগী সুস্থ হবে না। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে ওষুধ, ফিজিওথেরাপি ও কিছু নিয়মকানুনের মাধ্যমে এ রোগ থেকে ভালো হওয়া সম্ভব।

  • ডা. মো. নূর আলম
  • সিনিয়র কনসালট্যান্ট, আলোক হাসপাতাল লি., মিরপুর ৬, ঢাকা

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.