এই রোগের নামটি একটু অপরিচিত কিন্তু আমাদের আশেপাশের অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আসুন আমরা জেনে নিই জিবিএস (গুলিয়ান-বারী-সিনড্রোম) কি? এই রোগে কি হয়? এবং জিবিএস চিকিৎসা সম্পর্কে।
জিবিএস (গুলিয়ান-বারী-সিনড্রোম) এটি একটি ইমিউন প্রতিক্রিয়া জনিত রোগ। ক্যামপাইলো ব্যাকটার জিকুনী নামের একটি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের পরে জিবিএস দেখা দেয় বলে সাধারণভাবে মনে করা হয়।

লক্ষণঃ

সাধারণ দেখা যায় কয়েকদিন থেকে পাতলা পায়খানা সাথে একটু জ্বর তার কয়েক সপ্তাহ পর হাত পায়ে অবশ অবশ ভাব এবং ক্রমান্বয়ে হাত ও পায়ের শক্তি কমে যায় এমন কি হাত, পা নাড়ানোর ক্ষমতা থাকে না অর্থাৎ পেশীগুলো অবস হতে থাকে। এটি ক্রমান্বয়ে শরীরের পেরিফেরী বা দুরের অংশ থেকে সেন্ট্রাল বা উপরের দিকে আসতে থাকে। ভয়ের ব্যাপার হল কিছু কিছু ক্ষেত্রে রেসপেরেটরী মাংসপেশী প্যারালাইজড হয়ে শ্বাস নিতে না পেরে ৫ থেকে ৬ শতাংশ রোগী প্রাণ হারায়।

কাদের বেশী হয়?

জি.বি.এস নারী পুরুষ উভয়েরই হতে পারে, লিঙ্গ ভেদে রোগের প্রকোপের তেমন পার্থক্য দেখা যায় না।

করণীয়ঃ

একিউট বা জরুরী অবস্থায়ঃ

রোগীর অবস্থা যখন সংকটাপন্ন অর্থাৎ রোগী হাত-পা নাড়তে পারে না। এমনকি শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে এই পর্যায়ে রোগীকে দ্রুত বিশেষায়িত হাসপাতালে নিতে হবে, রোগীর অবস্থা অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগীর চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন। প্রয়োজনে আইভিআইজি নামক ওষুধ ইন্জেকশনের মাধ্যমে দেয়া হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইসিইউতে নিয়ে ভেন্টিলেটর মেশিনে যতদিন নিজ থেকে শ্বাস নিতে না পারছে ততদিন কৃত্রিম শ্বাস- প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করার প্রয়োজন পড়ে।

পূর্নবাসন চিকিৎসাঃ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সেরে উঠতে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। রোগীর সংকটাপন্ন অবস্থার উন্নতির পর রোগীকে হাত পায়ের শক্তি বাড়ানো ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে ঔষধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এই ক্ষেত্রে রোগীকে দিনে ৩-৪ বার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা দিতে হয়, বিশেষ করে হাত পায়ের শক্তি বাড়ানোর জন্য ইলেকট্রিক্যাল সিমুলেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন রকম স্ট্রেনদেনিং এক্সারসাইজ, ব্যালেন্স ট্রেনিং, গেইট ট্রেনিং ইত্যাদি চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব

 

এম. ইয়াছিন আলী

চেয়ারম্যান ও চীফ কনসালটেন্ট
ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসাপাতাল
বাড়ী নং-১২/১, রোড নং-৪/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published.